আলাপে: রায়গঞ্জ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র
প্রকাশ্যে ঘোষণা না করলেও শুভেন্দু অধিকারীর পর ফিরহাদ হাকিমই তৃণমূলের মালদহ জেলার পর্যবেক্ষক। দলীয় সূত্রে এমনই খবর। আর সেই সূত্রেই মঙ্গলবার জেলা সফরে এসে দলীয় কর্মিসভাও করেন তিনি। পাশাপাশি, কলকাতায় ফিয়ে যাওয়ার আগে রাতে মহানন্দা ভবনে দলীয় জেলা নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন ফিরহাদ। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে তিনি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, প্রতিটি বিধানসভায় জনসভা করতে ফের তিনি জেলায় আসবেন। দ্রুত দিনক্ষণ ঠিক করে তাঁকে জানাতে বলা হয়েছে। সেই সময় দলের জেলা কোর কমিটি ও জেলা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে বিধানসভা ভোটের রণকৌশল ঠিক করবেন বলে খবর। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম নুর বলেন, ‘‘ফিরহাদ সাহেব সাংগঠনিক কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেটা বাইরে বলার বিষয় নয়।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ কর্মিসভা শেষ করে ফিরহাদ যখন মহানন্দা ভবনে যান তখন মালদহ জেলা পরিষদের একাধিক তৃণমূল সদস্য দল বেঁধে গিয়ে নিজেদেরই পরিচালিত জেলা পরিষদের কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ করেন। মূলত অভিযোগের তীর ছিল জেলা পরিষদ সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলের দিকে। তাঁদের অভিযোগ, জেলা পরিষদে অর্থ কমিটির মিটিং করেই কাজ হচ্ছে। সাধারণ সভা কার্যত হয় না। ফলে জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্যরা কাজকর্ম নিয়ে রীতিমতো অন্ধকারে থাকছেন। তাঁদের দাবি, এই জেলা পরিষদে প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী যখন মেন্টর ছিলেন সে সময় ভালভাবে কাজ হচ্ছিল। কিন্তু কৃষ্ণেন্দুকে সরিয়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতি অন্যরকম হয়েছে। ফিরহাদের কাছে কৃষ্ণেন্দুকে ফের মেন্টর করার দাবি জানিয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্যরা।
শুভেন্দু অধিকারী দল বদল করার আগে জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ নয় জন সদস্য দীঘায় ঘুরতে যাওয়ার নাম করে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন বলেও দলের কাছে নালিশ জানিয়েছিল জেলা পরিষদের একাংশ সদস্য। সেই ঘটনায় দলের তরফে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না তা নিয়েও জেলা পরিষদ সদস্যরা মঙ্গলবার ফিরহাদের কাছে অভিযোগ জানান বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে হইচই হওয়ায় সভাধিপতি বুধবার জেলা পরিষদের দলীয় সদস্যদের নিয়ে অতিথি আবাসে আলোচনায় বসেন। বিক্ষুব্ধ সদস্যদের সঙ্গে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে খবর। যদিও সভাধিপতি মন্তব্য করেননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা নেই। সবাইকে নিয়েই কাজ হচ্ছে।’’