প্রথমবার গ্রেফতারের পর গোদালা কিরণ কুমার। —ফাইল চিত্র।
এসজেডিএ আর্থিক দুর্নীতি মামলার জাল ক্রমশই গুটিয়ে আনছে সিআইডি। ফের গ্রেফতার হয়েছেন এসজেডিএ-র প্রাক্তন সিইও গোদালা কিরণ কুমার। এর পরে কে তা নিয়েই এখন শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি দুই এলাকায় চলছে জোর জল্পনা। কারণ, ওই মামলায় একাধিক রাজনৈতিক নেতাকে অতীতে পুলিশ কয়েক দফায় জেরা করেছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অনেকেই জড়িত বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা।
অতীতে এই মামলায় যাদের জেরা করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন এসজেডিএ প্রাক্তন সদস্য তথা এসজেডিএ প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে। তিনি শিলিগুড়ির বিধায়ক। অন্য সদস্য তথা মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের তৎকালীন সভাপতি চন্দন ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান গোদালা কিরণ কুমারকেও একাধিকবার জেলা করা হয়। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তৎকালীন পুলিশ কমিশনারকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গোদালা কিরণ কুমার জামিন পান।
এর পরেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বাঁচাতেই গোদালার কিরণ কুমারের মতো অভিযুক্তকে ছাড় দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। বিরোধীরা জানান, বোর্ডের সদস্য তথা ওই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের একাংশকে বাঁচাতে চেষ্টা হচ্ছে। বোর্ডে সদস্যদের সায় ছাড়া এত বড় দুর্নীতি হতে পারে না। পরবর্তীতে এই মামলার দায়িত্ব সিাইডি’র হাতে তুলে দেওয়া হয়। বস্তুত, পরবর্তীতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিক্যাল কমিটিকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের সমীক্ষা করানো হয়েছিল। তারাও বোর্ডর্ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘নোট’ দিয়েছেন বলে জানান, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা বর্তমানে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। বিধায়ক শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ, আইন আইনের পথে চলবে। এর বেশি এখনই কিছু বলছি না।’’
ধায়ক তথা এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রবাবুর ফোনে যোগাযোগ করা হলে দেখা যায় তাঁর মোবাইল বন্ধ রয়েছে। রঞ্জনবাবুর মোবাইলে পোন করা হলে রিং বেজে গিয়েছে। তবে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, ‘‘তদন্ত নিশ্চই সঠিক পথেই এগোচ্ছে। আশা করছি, শীঘ্র মূল সত্য প্রকাশ পাবে।’’
এসজেডিএ-এর দুর্নীতির বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন কংগ্রেস নেতা সুজয় ঘটক। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এসজেডিএ-এর দুর্নীতির মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন থেকে শুরু করে মামলাও দায়ের করেছি। একবার কিরণ কুমারকে গ্রেফতার করেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এখন প্রমাণ হল আমাদের দাবি-ই ঠিক ছিল। এসজেডিএ-এর দুর্নীতিতে আরও যারা জড়িত রয়েছে, তাদেরকেও দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।’’ ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বর কিরণ কুমারকে গ্রেফতারের পরে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে কে জয়রামনকে সরিয়ে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ দিন সুজয়বাবু বলেন, ‘‘এবার জয়রামনকেও শিলিগুড়িতে ফিরিয়ে আনতে হবে।’’