কবে পাহাড়ে যেতে পারবেন পর্যটকরা?
পুজোর আগে আবার পর্যটনকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা শুরু হল পাহাড়ে। বুধবার দুপুরে দার্জিলিং জিমখানা ক্লাবে জিটিএ-র চেয়ারম্যান এবং অফিসারেরা শৈলশহরের হোটেল মালিকদের সঙ্গে একটি ঘরোয়া আলোচনা করেন। জিটিএ সূত্রের খবর, টানা হোটেল, হোম স্টে বন্ধ করে বসে থাকাটা আর ঠিক নয় বলে জিটিএ-র তরফে জানানো হয়েছে। তাদের যুক্তি, এতে অনেক মানুষ চরম বিপদে পড়েছেন। বদলে করোনার সঙ্গে লড়াই করে নতুন পরিস্থিতিতে কাজ করাটাই যুক্তিপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ দিনের বৈঠক থেকে হোটেল এবং হোম-স্টে মালিকদের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে বলা হয়। সেখানেই ঠিক হয়েছে, আগামী রবিবার দুপুরে পাহাড়ের দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, কার্শিয়াং— সব জায়গার হোটেল, হোম-স্টে এবং পরিবহণ ব্যবসায়ীরা জিমখানা ক্লাবেই বৈঠক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন।
দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিনোদ খন্না বলেন, ‘‘আগামী রবিবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। সবাই নিজেদের বক্তব্য রাখবেন। দেখা যাক কী দাঁড়ায়!’’ জিটিএ পর্যটন দফতরের তরফে এক কর্তা জানান, ওই দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলে তা নিয়ে জিটিএ চেয়ারম্যান পর্যালোচনা করে তার পরে নিজের মত জানাবেন।
করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে পাহাড়ে হোটেল, হোম-স্টে, লজ, রির্সট বন্ধ। জুন মাসে এক দফায় তা খোলা হলেও তা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। দার্জিলিঙের হোটেল থেকে কলকাতার একটি পর্যটক দলকে সমতলে নেমে যেতে বাধ্য করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় হোটেল মালিকেরাও বুকিং বন্ধ করেন। কালিম্পঙের হোটেল, হোম-স্টেতেও বুকিং বন্ধ। এর পরে ১ জুলাই জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা ঘোষণা করেন, নতুন করে নির্দেশিকা জারি না হওয়া অবধি পাহাড়ে পর্যটকদের বুকিং নেওয়ার দরকার নেই। তবে ১৫ অগস্টে সমতলের বেশ কিছু মানুষ দিনভর পাহাড়ে কাটিয়ে গিয়েছেন।
জিটিএ অফিসারেরা জানাচ্ছেন, গত পাঁচ মাসে পর্যটন ব্যবসা পাহাড়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছেন পরিবহণ ব্যবসায়ীরাও। গরমের মরসুম লকডাউন আর করোনার আতঙ্কে কাটিয়েছে পাহাড়। বহু হোটেল, লজ, হোম-স্টে-র কর্মী কাজ হারিয়েছেন। বেতন নিয়ে এখনও হোটেল কর্মীদের সঙ্গে মালিকদের টানাপড়েন চলছে। এর মধ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার ধীরে ধীরে আনলকের পক্ষে সওয়াল করছে। করোনাকে সঙ্গে নিয়েই কাজকর্ম শুরু করার কথা বলা হচ্ছে। পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসাও সেই পথে হাঁটুক, এখন সেটাই চাইছে জিটিএ।
কিন্তু হোটেল বা হোম-স্টে মালিকদের দাবি, হোটেল, হোম-স্টে বন্ধ থাকলেও নানা কর, বিদ্যুত বিল দিতে হচ্ছে। কর্মীদের বেতন তো রয়েছেই। খোলার পর আশানুরূপ লোকজন আসছে না। এলেও বাসিন্দারা তাঁদের থাকতে দিচ্ছেন না। তা হলে কী করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে? এ সব নিয়েই রবিবারের বৈঠকে আলোচনা হবে।