সিটংয়ের একটি হোম-স্টে। নিজস্ব চিত্র binod.dascamera@gmail.com
উন্নত পরিষেবা দিতে হোম-স্টে মালিকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে চলছে রাজ্য পর্যটন দফতর। সূত্রের খবর, গত ১৯ জুলাই রাজ্য কারিগরি শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবকে চিঠি দিয়ে নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু-ভিত্তিক ‘কোর্স মেটেরিয়াল’ তৈরির অনুরোধ করেছেন পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। গত ২২ মে রাজ্য পর্যটন দফতরের টাস্ক ফোর্সের বৈঠক হয়। তাতে হোম-স্টে মালিকদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে নতুন কোর্স তৈরির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। কোর্স অনলাইন রেখে মালিকদের সময়মতো তা ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে বলা হয়েছে।
মোট ১১টি বিষয়কে সময় দিয়ে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। হোম-স্টে মালিকদের জন্য দফতর একটি কোর্স তৈরি করেছিল। তাতে আট ঘণ্টা ‘থিওরি’ এবং ১২ ঘণ্টা ‘প্র্যাকটিকাল কোর্স’ ছিল। কিন্তু তাতে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি এক সঙ্গে অনেককে কোর্স করানো বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করানোর বিষয়টিও সামনে আসে। এর পরেই ‘অনলাইন কোর্স’ নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়। সেই জায়গা থেকে বিষয়ভিত্তিক ৩০ মিনিট, ৪০ মিনিট বা ৪০ মিনিটের ভি়ডিয়ো তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। গ্রামীণ পর্যটন, বাজারের সঙ্গে সেতুবন্ধন, গন্তব্য তৈরি, খাবারের মতো একাধিক বিষয়ে ভিডিয়ো তৈরির কথা বলা হয়েছে।
পর্যটন দফতরের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী থেকে দফতরের তরফে হোম-স্টে ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শুধু গন্তব্য বা বাড়ি তৈরিই নয়, প্রশিক্ষণ, নথিভুক্তকরণ, ঋণের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। এ বার পরিষেবা, মানোন্নয়ন এবং হোম-স্টে জনপ্রিয় করার জন্য প্রশিক্ষণের কোর্স তৈরি হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যের পর্যটননির্ভর বিভিন্ন প্রান্তে হাতেগোনা হোম-স্টে তৈরি হলেও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে এর সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। আপাতত উত্তরবঙ্গের আটটি জেলায় সরকারি ভাবে নথিভুক্ত ১৬০৮টি হোম-স্টে রয়েছে। নথিভুক্ত না হওয়া হোম-স্টে রয়েছে অন্তত দু’হাজার। নথিভুক্ত হোম-স্টে সব চেয়ে বেশি রয়েছে কালিম্পং জেলায়— ১০৩৪টি। এ ছাড়া, দার্জিলিঙে ২৩২টি, জলপাইগুড়িতে ১১৯টি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ২৭টির মতো জেলায় জেলায় আরও বেশ কিছু হোম-স্টে রয়েছে। শুধুমাত্র উত্তর দিনাজপুরে কোনও সরকারি নথিভুক্তহোম-স্টে নেই।
অফিসারেরা জানান, সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে হোম-স্টে তৈরি হলেও কয়েকটির পরিষেবার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে জনপ্রিয়তা বাড়ানো, বাজারে প্রচার, পরিচ্ছন্নতা-সহ নানা বিষয়। তাই এই প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত। পরিষেবা উন্নত করে তুলতে কী কী করণীয়,এর ফলে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে মালিকদের। অনলাইন কোর্সে নথিভুক্ত হওয়ার পরে তাঁরা সময়মতো ভিডিয়ো দেখে নিতে পারবেন। কোর্স সম্পূর্ণ হওয়ার পরে পরীক্ষা হবে।