প্রতীকী ছবি।
গণপিটুনির ঘটনায় আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নিতে আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের পুলিশ কর্তারা। বৃহস্পতিবার কোচবিহারে ওই জেলার পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার জেলার শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ অন্য কর্তারা। সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
জুন মাসের গোড়ার দিকে আচমকাই আলিপুরদুয়ার শহরের কাছে পাটকাপাড়া এলাকায় ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তার জেরে ওই মাসের মাঝামাঝি সময় সেখানে ছেলেধরা সন্দেহে এক বৃদ্ধকে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পর জেলার অন্যত্রও ছেলেধরা গুজব ছড়য়ে পড়তে শুরু করে। সেইসঙ্গে একটার পর একটা গণপিটুনির ঘটনাও ঘটতে থাকে। পুলিশের অবশ্য দাবি, গণপিটুনির ঘটনা রুখতে তারা শুরু থেকেই সচেষ্ট ছিল। প্রথম একটি-দুটি ঘটনার পর থেকেই পুলিশের তরফে প্রতিটি থানা এলাকায় ব্যাপকহারে সচেতনতা প্রচার চালানো হয়। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে গণপিটুনি থেকে আক্রান্তকে বাঁচাতে গিয়ে পুলিশও আক্রান্ত হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোচবিহারে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিষয়টি ওঠে। সেখানে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারা গণপিটুনি রুখতে জেলা পুলিশের সচেতনতা মূলক প্রচারের প্রশংসা করেন। সেইসঙ্গে এই প্রচার চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ফের কোনও গণপিটুনির ঘটনা ঘটলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘গণপিটুনির ঘটনায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা ও এ ধরনের ঘটনা রুখতে প্রচার চালিয়ে যাওয়ার কথা রাজ্যের পুলিশ কর্তারা আমাদের বলেছেন। অবশ্যই তা পালন করা হবে।’’
জুলাই মাসের শেষের দিকে তাসাটি চা বাগান এলাকায় গণপিটুনির শিকার হয়ে আলিপুরদুয়ারে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। গত রবিবার হ্যামিল্টনগঞ্জে গণপিটুনির শিকার হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তার ঠিক আগেই গণপিটুনি নিয়ে বিধানসভায় নতুন বিল পাশ হয়। তারপরও হ্যামিল্টনগঞ্জের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছিল। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশকে রাজ্যের পুলিশ কর্তাদের আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত বিভিন্ন মহলের। যদিও পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘হ্যামিল্টনগঞ্জের ঘটনায় পাঁচজন জড়িত থাকলেও ওটাকে আমরা গণপিটুনি বলছিনা। সেজন্যই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা হয়েছে।’’