টাকার বিনিময়ে দলে পঞ্চায়েতে ভোটের টিকিট ‘বিক্রি’ হচ্ছে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। প্রতীকী চিত্র।
লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দলে পঞ্চায়েতে ভোটের টিকিট ‘বিক্রি’ হচ্ছে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। রাজগঞ্জের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে নবজোয়ার কর্মসূচিতে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ভোটাভুটি হলেও, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত উপেক্ষা করে কিছু নেতা ইচ্ছে মতো নাম সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। অভিযোগ, নাম ঢোকানোর জন্য লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেনও চলছে।
গত কয়েক দিন ধরে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল পার্টি অফিসে ব্লক নেতাদের সঙ্গে দলের পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। বৈঠকে পঞ্চায়েতের তিন স্তরে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে। নবজোয়ার কর্মসূচিতে ভোটাভুটিতে উঠে আসা নামের পাশাপাশি, ব্রক এবং জেলা নেতারাও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কিছু নাম দিয়েছেন। দলের অন্দরে গোষ্ঠী-ভারসাম্য বজায় রাখতেই তা করা হয়েছে বলে দাবি করলেও এই নাম দেওয়া নিয়েই সোমবার দলের একাংশ টাকা লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অমান্য করা হচ্ছে জেলায়?
তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের সহ-সভাপতি রাজগঞ্জের নেতা জাফিরুল হক বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ভোটাভুটিতে যাঁর নাম উঠে আসবে, তাঁকেই টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা দেখছি, ভোটাভুটির নাম বাদ দিয়ে ব্লক আর জেলা আালাদা প্রার্থী তালিকা তৈরি করছে। যাঁরা এত দিন আবাস থেকে একশো দিনের কাটমানি খেয়েছেন, তাঁদেরই টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এ সবই হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। দলকে বাঁচাতে গেলে এ সব বন্ধ করতে হবে।’’
জেলা বা ব্লক থেকে নাম আসার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়। তিনি বলেন, ‘‘যত দূর বুঝেছি, ভোটাভুটি ছাড়াও ব্লক থেকে যাঁর নাম উঠে আসবে, তাঁকে টিকিট দেওয়ার কথা বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতোই সবার সঙ্গে আলোচনা করে সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর সঙ্গে লেনদেনের কোনও সম্পর্কই নেই।’’
গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই নিয়ে যে বৈঠক হয়ে গেল, তাতে প্রথমে জনজোয়ারের ভোটাভুটিতে উঠে আসা নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই ব্যক্তিদের গ্রহণযোগ্যতা কেমন, তা যাচাই করেছে দলের পরামর্শদাতা সংস্থা। সে নামের বাইরেও ব্লক এবং জেলা থেকে নাম চাওয়া হয়েছে। উপস্থিত ব্লক নেতা, জেলা নেতৃত্ব এবং পরামর্শদাতা সংস্থা এক মত হলেই নাম তালিকায় রাখা হয়েছে। তবে ভোটাভুটিতে উঠে আসা নামকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে খবর। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, ভোটাভুটির হয়ে যাওয়ার পরেও, কেন নতুন নাম নেওয়া? এই প্রশ্নের সূত্রেই মোটা টাকার বিনিময়ে টিকিট ‘বিক্রি’র অভিযোগ উঠেছে। যদিও দলের এক নেতার কথায়, ‘‘গোষ্ঠী কোন্দল যাতে না বাড়ে, তাই সব গোষ্ঠী থেকে নাম নেওয়া হয়েছে। যে সব নাম ভোটাভুটিতে উঠে এসেছে, সেগুলি আলাদা করে চিহ্নিত করা থাকবে। বাকিটা রাজ্য নেতৃত্ব দেখে-বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’