—প্রতীকী চিত্র।
রভোটের আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের ঘরে বৃহস্পতিবার গোপন কর্মিসভা করল তৃণমূল। দলের দার্জিলিং জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস এবং উত্তরবঙ্গের কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেব ছিলেন এই সভায়। পুরভোটের প্রস্তুতির একেবারে অন্তিম লগ্নেও দলের ‘মেয়র মুখ’ ঠিক হয়নি কেন, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন তাঁদের সামনে। দলের বিশ্বাসযোগ্যতা এতে থাকছে না বলেও দাবি করেন তাঁরা। গোষ্ঠী কোন্দলের সমস্যাও তুলে ধরেন নিচুতলার কর্মীরা। যদিও বৈঠকের পরে অরূপ জানান, গত ৫ বছরে শিলিগুড়ি বাম পরিচালিত পুরসভা ব্যর্থ বলেই বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দিতে বলা হয়েছে।
পুরভোটের আগে দল ঠিক কী অবস্থানে রয়েছে তা জানতেই ছিল এদিনের কর্মীসভা। পুরভোটে দলের ‘মেয়র মুখ’ কে হচ্ছেন, তা এখনও ঠিক না হওয়ায় বৈঠকের প্রথমেই দলের নেতারা হোঁচট খান। নিচুতলার কর্মীরা প্রশ্ন তোলেন, দল জিতলে মেয়র কে হবে তা আগে থেকে ঠিক করেই প্রচারে নামতে হবে। তা না হলে বিশ্বাসযোগ্যতা মার খেয়ে যাচ্ছে। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকের পর অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কাকে ভাবী মেয়র হিসেবে সামনে রেখে দল লড়াই করবে, তা কলকাতা থেকে দলনেত্রী ঠিক করবেন। তবে বাম পরিচালিত পুরসভা পরিষেবা দিতে ব্যর্থ। তা সামনে রেখেই বাড়ি বাড়ি প্রচারের নির্দেশ দিয়েছি।’’
নিচুতলার নেতা-কর্মীদের দাবি, অশোক ভট্টাচার্য ব্যর্থ বলে প্রচারের পরেও তৃণমূল কেন পিছিয়ে পড়ছে? সূত্রের দাবি, তার কারণ হিসেবে দলীয় কর্মীরা বৈঠকে দাবি করেন, একাধিক ওয়ার্ডে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চরমে উঠেছে। টিকিটের দাবিদার একাধিক নেতা একে অপরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন। তা না থামালে দল বিপদে বিপদে পড়বে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে গোলমাল। সমস্যা রয়েছে ২২, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডেও।
কর্মীদের দাবি
• মেয়র পদপ্রার্থীর মুখ সামনে রেখে নির্বাচনে লড়ুক দল
• গোষ্ঠীকোন্দল কমাতে হবে একাধিক ওয়ার্ডে
• সাংগঠনিক দুর্বলতা বারবার দলের গতি শ্লথ করছে
• শিলিগুড়ির মূল সমস্যাগুলি চিহ্নিত এবং তা নিয়ে পোক্ত আশ্বাস দরকার
• স্বজনপোষণ থেকে বাঁচতে পুরভোট কমিটি গঠনের প্রস্তাব
কর্মীদের আরও দাবি, শহরের সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলি নিয়ে মানুষকে সঠিক আশ্বাস দিতে পারছে না দল। তাই দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত শিলিগুড়ি পুরসভায় ক্ষমতায় আসতে পারছে না তৃণমূল। তাই তাঁরা একটি পুর নির্বাচন কমিটি গড়ারও প্রস্তাব দেন। যদিও তা খারিজ করে অরূপ জানান, এর ফলে কোন্দল আরও বাড়বে। যুব এবং মহিলাদের অনেকেই সক্রিয় নন বলে অভিযোগ। অনেকের সরকারি উন্নয়নের প্রকল্পগুলি নিয়ে ভাল ধারণাই নেই। বৈঠকে গৌতম দেব বলেন, ‘‘এপ্রিলের শুরুতে ভোট ধরে নিয়ে সময় নষ্ট একদম করা যাবে না। সরকারি কাজের তথ্য দিয়ে প্রচার করতে হবে।’’
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ রকম অনেক বৈঠক করেই ওরা আমাকে ব্যর্থ বলে দেখাতে চেয়েছে। লাভ কিছু হয়নি। প্রতিবন্ধকতার পাহাড় ডিঙিয়ে আমি ওদের চোখে চোখ রেখে কথা বলেছি।’’