প্রতীকী ছবি।
ভরসা শুধু ভোট কাটাকাটির অঙ্কই। তাই এবারেও জয়ের আশা দেখছে রাজ্যের শাসক দল। শুধু কোচবিহার পুরসভা নয়, জেলার ছ’টি পুরসভাতেই একই ‘অঙ্কে’ তাদের বাক্সেই ভোট বেশি পড়বে বলে আশায় তৃণমূল।
শাসকের হিসেবে অঙ্কটা সহজ। বিরোধী ভোট একাধিক বাক্সে পড়লেই তা ভাগ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে লাভবান হবে তৃণমূল। বিরোধীরা অবশ্য দাবি করছে, অঙ্কটা এবারে ততো সহজ হবে না। কারণ, অধিকাংশ মানুষই শাসকের উপরে ক্ষুব্ধ। ফলে বিরোধী প্রার্থীরাই বেশিরভাগ ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকবে। মুখে অবশ্য শাসক দলের কেউই অঙ্ক নিয়ে কিছু বলতে রাজি নয়।
তৃণমূলের নির্বাচনী অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতাদের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে বামেদের একটি বড় অংশের ভোট পড়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক অটুট থাকলেও সেখানেই পিছিয়ে যায় তারা। পুরসভায় ইতিমধ্যেই তেড়েফুঁড়ে নেমেছে বাম-কংগ্রেস জোট। তারা যদি নিজেদের ভোট বাক্সে এবার প্রভাব ফেলতে পারে, তাহলে লোকসানে পড়বে বিজেপি। সেখান থেকেই একটি অংশের ভোট ফিরে আসবে বামেদের পকেটে। সেক্ষেত্রে তৃণমূল নিজেদের ভোট ধরে রাখতে পারলেই তারা বাজিমাত করতে পারবে।
তবে এই অঙ্কের কথা সরাসরি মানছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বেশিরভাগ মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন। বিজেপি সম্পর্কে মানুষ সব বুঝতে পেরেছেন। তাই এবারে ওই পথে তারা যাবে না। আর বামেদের ভূমিকা নিয়ে মানুষ অনেক আগে থেকেই ক্ষুব্ধ। তাই এবারে সব পুরসভাতেই আমাদের জয় হবে।”
তবে এসব কোনও অঙ্কেই যে তৃণমূল জিততে পারবে না, তা পরিষ্কার করে জানিয়েছে বিজেপি। দলের জেলার কার্যকরী সভাপতি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “লোকসভার পরে পরিস্থিতি আরও পাল্টে গিয়েছে। মানুষ প্রকাশ্যেই তৃণমূল ও বাম ছেড়ে বিজেপিতে চলে এসেছে। এবারে আরও বেশি ভোটে জয় হবে আমাদের। ভোট কাটাকুটির অঙ্কে কোনও লাভ তৃণমূল পাবে না।”
পুরসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের জোট হয়েছে। বামেদের সংগঠন দুর্বল হলেও ভোটারের একটি সংখ্যা বামেদের সঙ্গে রয়েছে। কংগ্রেসেরও সামান্য কিছু ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। বাম নেতা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “এবারে পরিস্থিতি একেবারে অন্যরকম। তৃণমূলের উপর মানুষ ক্ষুব্ধ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পাশাপাশি, গত কয়েক মাসে বিজেপির ভূমিকার মানুষ বীতশ্রদ্ধ। তাই এবারে আমাদের জয় নিশ্চিত।” তবে শেষ বাজিতে কার জিত হবে আর কার হার, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।