প্রচার-ফাঁকে। কালিম্পঙে এক ফাঁকে কচিকাঁচাদের হাতে লজেন্স দিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সোমবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মিছিল থেকে বেরিয়ে কখনও লাগোয়া ফুটপাথে উঠে গেলেন। হাত মেলালেন বিভিন্ন দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বাসিন্দাদের সঙ্গে। কখনও দোকানে ঢুকে মালিকদের সঙ্গে কথা বললেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির যাত্রীদের সঙ্গে হাত মেলালেন। কখনও ঢুকে পড়লেন বাড়িতেও। শুনলেন তাঁদের অভাব অভিযোগ। রাজ্যের এক মন্ত্রীর এহেন আচরণে পদম সন্ন্যাসী, অজয় সিংহ ভুজেলদের মতো বাসিন্দারা প্রথমটায় হকচকিয়ে যান। মন্ত্রী হাত জোড় করে তাঁদের বলেন, ‘‘পুরভোটে তৃণমূলকে জেতান। এই শহরকে আমরা সাজিয়ে দেব।’’
সোমবার কালিম্পঙে রাজ্যের পূর্ত এবং ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে এ ভাবেই দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার সারতে দেখা গেল। পাহাড়ে দলের পর্যবেক্ষক তিনিই। রবিবার রাতেই কালিম্পঙে পৌঁছোন অরূপবাবু। মঙ্গলবার পর্যন্ত এখানেই থাকবেন। নতুন জেলা কালিম্পঙে ভোট পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন আলিপুরদুয়ারের জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মা। তাঁকে নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ওই রাতেই একাধিক বৈঠক করেন। এ দিন সকাল থেকে প্রচারে বার হন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মেলার মাঠ থেকে প্রচার মিছিলে হাঁটা শুরু। থানামোড় থেকে ডম্বরচকের দিকে যেতেই মিছিল থেকে বেরিয়ে ফুটপাথে উঠে হাত মেলাতে, হাত জোড় করে ভোট চাইতে দেখা যায় অরূপবাবুকে। পরে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারের সময় স্থানীয় বাসিন্দা দুর্গা শর্মার বাড়িতে ঢুকে একটু জিরিয়ে নেন। তাঁর পাঁচ বছরের নাতনি সম্ভবী ছেত্রীকে কোলে তুলে আদর করেন।
দুর্গাদেবী বলেন, ‘‘পাহাড়ে কাজের অভাবে ছেলেমেয়েরা ঘরে বসে রয়েছে। পানীয় জল, নিকাশি পরিষেবা নেই।’’ মন্ত্রী জানান, পাহাড়ে এখনও তাঁদের কোনও জনপ্রতিনিধি নেই। অথচ মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়বাসীকে ভালবাসেন। উন্নয়ন চান। তিনি কালিম্পংকে জেলা করে দিয়েছেন। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী কলকাতাকে যে ভাবে সাজিয়েছেন, পাহাড়কে তার চেয়েও ভাল করে সাজিয়ে দেবেন।’’
যা দেখে মোর্চার জেলা সম্পাদক রাম বাহাদুর ভুজেল বলেন, ‘‘সবই নির্বাচনী চমক।’’ জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রীর কথায়,‘‘এটা ভাল লাগছে যে আমাদের বিরুদ্ধে লড়তে রাজ্যের মন্ত্রীদের এখানে ছুটে আসতে হচ্ছে। মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার দেওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য।’’