West Bengal Lockdown

কন্টেনমেন্ট জ়োনে পুলিশ পাহারা

কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সব জায়গায় যেন বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। বাঁশের ব্যারিকেডের পাশ দিয়ে চলছে অবাধ যাতায়াত।। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের বহু জায়গায় এমনই চিত্র। ঘুরে দেখল আনন্দবাজার। কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সব জায়গায় যেন বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। বাঁশের ব্যারিকেডের পাশ দিয়ে চলছে অবাধ যাতায়াত।। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের বহু জায়গায় এমনই চিত্র। ঘুরে দেখল আনন্দবাজার। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৬:২৯
Share:

নিয়ম ভেঙে: মাঝেরডাবরির উত্তর পানিয়ালগুড়ির তিরকি পাড়ায় লকডাউন এলাকার ছবি। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ মোতায়েন

Advertisement

বীরপাড়া: অনেকে যেন কথাই শুনছিলেননা। পাশেই যে একজন করোনা আক্রান্ত রয়েছেন, তা নিয়ে কুছ পরোয়া নেহি মনোভাব। সকাল থেকেই কয়েকজন মাস্ক ছাড়াই বেরিয়ে পড়ছেন। জিজ্ঞেস করলেই বলছেন, “ভুলে গিয়েছিলাম।” এ বারে ওই বাসিন্দাদের নজরে রাখতে, পুলিশ মোতায়েনকরা হবে। বীরপাড়া বাজার এলাকায় একটি কনটেন্টমেন্ট জোনে চব্বিশ ঘণ্টার জন্য পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বাকি দু’টি কন্টেনমেন্ট জোন অবশ্য স্বাভাবিক থাকছে।’

আক্রান্ত এলাকা থেকে কর্মী

Advertisement

মেখলিগঞ্জ: মেখলিগঞ্জে করোনা সতর্কতায় কন্টেনমেন্ট জোন এলাকার জন্য সরকারি নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। তার পরেও ওই এলাকার বাসিন্দাদের দিয়েই মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ডিউটি করানোর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার, মহকুমা হাসপাতাল সুপার ও মেখলিগঞ্জের মহকুমাশাসক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি বদল হয়নি বলে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মীর দাবি। গত বৃহস্পতিবার মেখলিগঞ্জ পুরসভার ১ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুইজন করে মোট চারজন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যায়। রাতেই ওই দুই এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন ঘোষণা করে প্রশাসন। অভিযোগ, এক নম্বর ওয়ার্ডের কন্টেনমেন্ট জোন থেকে হাসপাতালে ডিউটি করানো হচ্ছে এক দম্পতিকে। তাঁরা মহকুমা হাসপাতালের ঠিকাদারের অধীন জেনারেটর ও রোগীর খাবার সরবরাহের কর্মী। চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়েই কাজ করতে হচ্ছে বলে তাঁরা জানান। অন্যদিকে নিজেদের আর্থিক কষ্ট সত্ত্বেও এলাকারই কেয়া বর্মণ, অন্নবালা রায়রা হাসপাতালে কাজ বন্ধ রেখেছেন। পাশাপাশি বাড়ি থেকে কলেজের কাজকর্ম চালাচ্ছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কন্টেনমেন্ট জোন এলাকার বাসিন্দা দীপ চন্দ।

বাফার্স জ়োন

ফালাকাটা: অবশেষে ফালাকাটার একটি পাড়াকে কন্টেনমেন্ট জোন ও ছ’টি রাস্তাকে বাফার্স জোন ঘোষণা করল আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। ফালাকাটায় পরপর দু’জন ব্যক্তির করোনা আক্রান্তের খবরে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ী সমিতি। বৃহস্পতিবার থেকে পাঁচদিনের লকডাউন ঘোষণা করে তারা। ফালাকাটাবাসী তা মেনে সমস্ত দোকান-বাজার বন্ধ রাখেন। তার শেষদিন ছিল রবিবার। রবিবার থেকেই প্রশাসনের উদ্যোগে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ির এলাকা অরবিন্দপাড়া কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়। শহরের কয়েকটি রাস্তা বাফার্স জোন ঘোষণা করা হয়। বাফার্স জোনের মধ্যে ফালাকাটা নেতাজি রোড, থানা রোড, হাটখোলা, মশলাপট্টি, দেশবন্ধুপাড়া এবং পশ্চিম রায়চেঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। অরবিন্দপাড়ার বাসিন্দা রাজু সরকার জানান, তাঁদের পাড়া কন্টেনমেন্ট জোন ঘোষণা করায় তাঁরা স্বস্তি পেয়েছেন।

সাবধানতায়

ভাটিবাড়ি: করোনা সংক্রমণ এড়াতে আলিপুরদুয়ারের ভাটিবাড়িতে শুক্রবার থেকে পাঁচ দিন পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করেন ব্যবসায়ী ও এলাকার বাসিন্দারা। আজ তৃতীয় দিন। ওষুধের দোকান ও যানবাহন চলাচল বাদে সব দোকানবাজার বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীতে কর্মরত এলাকার এক যুবক বাড়ি ফিরলে তাঁর করোনা ধরা পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যুবক এলাকার অনেকের সংস্পর্শেও আসেন। স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেন বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তাই রবিবার স্তব্ধ ছিল এলাকা। সংক্রমিত যুবকের বাড়ির লোকেদের প্রয়োজনীয় জিনিস, ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন যুব তৃণমূলের কর্মীরা।

চলছে নজরদারি

দিনহাটা: দিনহাটা মহকুমায় গত দু’দিনে ৩৮ জন করোনা সংক্রমিত হতেই এলাকাগুলিতে কনটেনমেন্ট জোন করা হচ্ছে। গোসানি রোড এলাকা ছাড়াও দিনহাটা দুই ব্লকের নয়ারহাট গোবরাছড়া ও শুকারুরকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছে। রবিবার দিনহাটার মহকুমাশাসক শেখ আনসার আহমেদ শহরের গোসানি রোড এলাকায় এবং ওই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে কোথায় কোথায় কনটেনমেন্ট জোন হচ্ছে তার খোঁজ খবর নেন। দিনহাটা দুই ব্লকের বিডিও জয়ন্ত দত্ত জানান, ব্লকের নয়ারহাট গোবরাছড়া ও শুকারুরকুঠি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৩২ জন নয়ারহাট গোবরাছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা।

হুঁশ হয়নি

মাঝেরডাবরি: মাঝরডাবরিতে অনেকেরই হুঁশ হয়নি স্বাস্থ্য দফতর কন্টেনমেণ্ট জোন ঘোষণা করলেও তাতে হুঁশ নেই পূর্ব মাঝরডাবরি এসসি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ অংশের বাসিন্দাদের। রবিবারও লকডাউনের প্রভাব দেখা গেল না সেখানে। অভিযোগ, এ দিনও ওই এলাকায় অবাধে লোকজন রাস্তায় ঘোরাফেরা করেছেন। মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর পানিয়ালগুড়ির ১১/২৪৫ নম্বর পার্টে অবশ্য লকডাউন মেনে চলছেন বাসিন্দারা। এ দিনও সেখানে পুলিশের নজরদারি ছিল।

(তথ্য সহায়তা: পার্থ চক্রবর্তী, সজল দে, রাজু সাহা, সুমন মণ্ডল ও দেবব্রত ঘোষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement