ভিড়: মদের দোকানের সামনে। সোমবার আলিপুরদুয়ার। ছবি: নারায়ণ দে
দোকানের সামনে থেকে একটা একটা করে ইট প্রায় ঘেঁষাঘেঁষি করে লাইন দিয়ে রাখা। রাস্তায় সেই লাইন অনেকটা দূর পর্যন্ত। প্রতিটি ইটে সেগুলির মালিকের নাম লেখা। আর মালিকেরা? দূর থেকে কেউ ঝোপের আড়ালে, কেউ দূর থেকে গলির আড়ালে জিরিয়ে নিচ্ছেন। তবে তাঁদের নজর কিন্তু নিজের নিজের ইটের দিকে। দিনের আলো ফুটলেই সেই ইট সরিয়ে যথাস্থানে দাঁড়িয়ে পড়বেন মালিকেরা।
টানা চল্লিশ দিন বন্ধ ছিল মদের দোকান। লকডাউনের দ্বিতীয় পর্বের শেষে গ্রিন জোনে মদের দোকান খোলায় কিছুটা ছাড় দিয়েছে সরকার। তাই টানা ‘উপবাস’ ভাঙতে আগের দিন রাত থাকতেই কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার দুই জেলার অনেক জায়গায় দেখা গেল এমনই ছবি। সোমবার সকাল হতেই চোখ কচলাতে কচলাতে অনেকেই দোকানের আশেপাশে ঘুরঘুর শুরু করেন। কোথাও কোথাও বাঁশ দিয়ে তড়িঘড়ি ব্যারিকেড তৈরি করে ফেলা হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে। একাধিক জায়গায় ভিড় সামলাতে হয়েছে পুলিশকে। শেষপর্যন্ত অবশ্য কোথাও দোকান খুলেছে দুপুর ৩টের পরে। কোথাও আবার দোকান খোলেইনি। হতাশ হয়ে ফিরেছেন গ্রাহকরা। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “নির্দেশ মেনেই একাধিক জায়গায় দোকান খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়।”
কোচবিহার শহরে চারটি মদের দোকান। জেলার বিভিন্ন জায়গায় আরও প্রচুর দোকান রয়েছে। সবগুলিই দুপুর পর্যন্ত বন্ধ ছিল। দুপুরের পরে কিছু জায়গায় খোলা হয়। তুফানগঞ্জে মদের দোকানের সামনে বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য ৬ ফুট দূরত্ব রেখে দিয়ে দেওয়া হয় সাংকেতিক চিহ্ন।
এ দিন দোকান খোলার নির্দেশ দেওয়া হয় দুপুরের পর। ৩টে থেকে ৭টা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়েছে। গ্রাহকপিছু দুই বোতল করে বরাদ্দ। মাথাভাঙায় অবশ্য দোকান বন্ধ ছিল। দিনহাটা, হলদিবড়ি, মেখলিগঞ্জেও দোকান বন্ধ ছিল। কোচবিহার হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ভূষণ সিংহ বলেন, “সবাইকে সরকারি নির্দেশ মেনেই দোকান
খুলতে হবে।”
আলিপুরদুয়ারের কোথাও সকালে মদের দোকান খুলতে দেখা যায়নি। বিকেলে বিভিন্ন জায়গায় দোকান খুলতেই প্রায় সব জায়গাতেই ভিড় উপচে পড়ে। ফলে দোকানের সামনে পুলিশ গিয়ে প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্বে মানতে বাধ্য করে। ধূপগুড়িতে সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মদের দোকানের সামনে লাইন পড়ে। সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন দোকানে ভিড় জমতে শুরু করে।
জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি, বানারহাট, বিন্নাগুড়ি, ময়নাগুড়ি নাগরাকাটায় ছিল একই ছবি। কোথাও আবার সামাজিক দূরত্ব না মেনে একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে মদ কিনতেও দেখা যায়। কুমারগ্রাম এলাকায় কোনও মদের দোকান খোলেনি। শামুকতলা থানা এলাকার মদের দোকানগুলি খুলে গিয়েছে। ভিড় ছিল না তেমন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)