প্রতীকী ছবি।
লকডাউন কার্যকর করতে রাস্তায় নেমে শেষে নদীতে মাছ ছাড়তে হল প্রশাসনের কর্মীদের। বৃহস্পতিবার কোচবিহার শহর লাগোয়া সুঙসুঙি বাজারের কাছে এমন ঘটনাই ঘটেছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, সাতসকালে কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পালের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি দল নজরদারির জন্য রাস্তায় অভিযানে নামেন। ঘুরতে ঘুরতে সুঙসুঙি বাজারে যান তাঁরা।
প্রশাসনের এক কর্মী জানান, তাঁদের কাছাকাছি আসতে দেখেই সুঙসুঙি বাজারে রাস্তার পাশে মাছের পসরা নিয়ে বসা কয়েকজন বিক্রেতা মাছ ফেলে দৌড়োদৌড়ি শুরু করেন। প্রশাসনের কর্মীরাই অবশ্য তাঁদের ডাকাডাকি করে ফেরানোর চেষ্টা করেন। কয়েকজন ফিরেও আসেন। লকডাউন মেনে চলার কথা তাঁদের বোঝানো হয়। সতর্কও করা হয়। এরপর অনেকেই মাছের পসরা গুটিয়ে সেখান থেকে চলে যান।
কিন্তু দু’তিনজন বিক্রেতা সেই যে চম্পট দিয়েছিলেন, তাঁদের আর পাত্তা পাওয়া যায়নি। তাঁদের পসরার জ্যান্ত কই, সিঙি, মাগুর মাছ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে যান সকলেই। মাছ ফেলে আসাটা ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। কারণ দাবিদারহীন তরতাজা মাছের মালিকানা নিয়ে কোনও কারণে বাদানুবাদের পরিস্থিতিও হতে পারে। আবার মাছগুলি এ ভাবে পড়ে থাকলে সেটাও অস্বস্তিকর। বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করে শেষপর্যন্ত জ্যান্ত ওইসব মাছ লাগোয়া মরা তোর্সা নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “যাঁরা ফিরেছিলেন তাঁদের মাছ তুলে দিয়ে বুঝিয়ে বাড়ি যেতে বলা হয়। কিন্তু যে দু’তিনজন ডাকডাকি করেও ফেরেননি তাঁদের পসরার জ্যান্ত মাছগুলিকে নদীতে ছাড়া হয়।”
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কারও যাতে আর্থিক ক্ষতি না হয় সেজন্যই সতর্ক করা, বোঝানোর ব্যাপারেই জোর দেওয়া হয়েছে। ওই জ্যান্ত মাছের বিক্রেতাদের জন্য অনেকটা সময় অপেক্ষাও করা হয়। প্রায় চার কেজির মতো জ্যান্ত মাছ ছিল বলে প্রশাসনের অনুমান। সবগুলিই লাগোয়া নদীতে ছাড়া হয়। এসব শুনে স্থানীয় এক রসিক বাসিন্দার মন্তব্য, ‘‘লকডাউনের সুবিধা এ বার হয়তো মাছেরাও বুঝছে!’’