ফাইল চিত্র
ভিন্ রাজ্য থেকে লক্ষাধিক শ্রমিক উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ফিরবেন কয়েক দফায়। সংক্রমণ রুখতে তাঁদের লালারসের পরীক্ষা জরুরি। যা পরিস্থিতি তাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবরেটরি মিলিয়েও সকলের লালারসের পরীক্ষা দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় চিন্তায় স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রশাসনের আধিকারিকদের অনেকেই।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, অধিকাংশ জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরার বিষয়ে প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট কোনও তথ্য নেই। কয়েকটি জেলায় আশাকর্মীদের দিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। সরকারি আধিকারিকদের বক্তব্য, ওই পরিসংখ্যান পেলে সেই মতো ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা, লালারসের পরীক্ষা ব্যবস্থা করা হবে। তবে বাইরে থেকে ফেরা বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের লালারসের নমুনা কী ভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব তা নিয়ে কিছুটা সংশয়ে স্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রতিদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ‘ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গন্যাস্টিক ল্যাবরেটরি’তে গড়ে ৫০০টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। মালদহের ভিআরডিএল-এ ৩০০ থেকে ৪০০টি নমুনা প্রতি দিন পরীক্ষা করা হয়। সে সব নমুনার মধ্যে বেশিরভাগই জেলা থেকে পাঠানো সন্দেহভাজন রোগীদের। ফালাকাটায় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে একটি নতুন ল্যাবরেটরি চালু হলেও সেখানে ১০-১২টি নমুনা জরুরি ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হবে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ২৯ মার্চ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং ৮ এপ্রিল মালদহে করোনা পরীক্ষা চালু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ভিন্ রাজ্য থেকে এত সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক একসঙ্গে ফিরতে শুরু করলে, কত জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘মালদহ ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে প্রতি দিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। যত বেশি সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা যায় সেই চেষ্টাই করা হবে।’’
কী ভাবে ওই দুই ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হবে?
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিষায়ী শ্রমিকদের লালারস পরীক্ষার জন্য ‘র্যাপিড কিট’-এর উপরেই ভরসা করা হচ্ছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রেকর পাঠানো সেই সব ‘কিট’-এ ত্রুটি থাকায় তা তুলে নেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে ‘অটোমেটেড রিয়্যাল টাইম পিসিআর’ যন্ত্র আনার চেষ্টা চলছে। তাতে প্রতিদিন দেড় হাজার নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হবে। ওই যন্ত্র আনার বিষয়ে এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও কথা বলেন উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক। তিনি জানান, দিন দশেকের মধ্যে ওই যন্ত্র আসবে বলে জানানো হয়েছে।