এই জায়গাগুলিতে প্রাচীর ভেঙে যাতায়াতের রাস্তা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ।
বহু জায়গাতেই ভেঙে পড়েছে সীমানা পাঁচিল। ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়ে যে স্থানীয়রা যাতায়াতের রাস্তা বানিয়েছেন, সেটা বহু দিনের অভিযোগ। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিকদের অনেকের দাবি, সেই সুযোগে বহিরাগতরা অবাধেই যখন তখন ঢুকে পড়ছে মূল ক্যাম্পাসে। সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসের ভিতরেই একাধিকবার হস্টেলের ছাত্রীদের নিগ্রহের মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে আন্দোলনও হয়েছে। শিক্ষক, আধিকারিক, পড়ুয়াদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাহীনতার এই ছবিটার বদল হয়নি গত কয়েক বছরেও। আর তার ফলেই গত ১৮ অগস্ট গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে কড়া পদক্ষেপ না করলে ফের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। ক্যাম্পাসের আবাসনে থাকা এক শিক্ষক বলেন, ‘‘আমাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। বর্তমানে চারদিকেই খোলা। তাই দু-এক জায়গায় লোক দেখানো রক্ষী রেখে লাভ নেই। আগে ক্যাম্পাসের সীমানা সিল করতে হবে। না হলে কোনও পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত করা যাবে না।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক, দুই ও আড়াই নং গেট লাগোয়া গোটা এলাকাতেই ভেঙে পরেছে সীমানা পাঁচিল। এশিয়ান হাইওয়ের রাস্তা তৈরির ফলে পাঁচিল ভেঙে গিয়েছে বলেই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের চা বাগান লাগোয়া চারটে জায়গাতে সীমানা প্রাচীর ভেঙে নিজেদের মতো রাস্তা বানিয়ে নিয়েছেন ক্যাম্পাস লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। ওই সব জায়গায় কোনও গেট বা দরজা নেই। থাকে না কোনও রক্ষীও। দিনরাত ওই সব গেট দিয়ে চলাচল করে গাড়ি, বাইক। দূরশিক্ষা বিভাগের পাশেও রয়েছে একটি গেট। সেটি রাতভর খোলা থাকে বলে অভিযোগ। ফলে নিরাপত্তা কার্যত শিকেয় উঠেছে। বছরখানেক আগে বহিরাগতের হাতে আবাসিকদের কেউ কেউ আক্রান্ত হন। তাতে উত্তাল হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। মধ্যরাত পর্যন্ত জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান অনেকে। তার পর একাধিক হস্টেলে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে ক্যাম্পাসের অন্যত্র ক্যামেরা নেই। কিছু জায়গায় ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে বলেই জানিয়েছেন নিরাপত্তা আধিকারিক।
রাতে ক্যাম্পাসে ঘুরে নিরাপত্তার ঢিলেঢালা ছবিই নজরে এসেছে। ১ নম্বর গেটে দেখা যায়নি কোনও নিরাপত্তারক্ষীকে। অথচ গেটের একটি অংশ খোলাই ছিল। ওই গেটের আগে-পরে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ায় সেখানে বেশি সংখ্যায় নিরাপত্তাকর্মী রাখা উচিত বলেই জানিয়েছেন শিক্ষকদের একটা অংশ। চা বাগান লাগোয়া ‘অবৈধ’ যাতায়াতের জায়গাগুলিতেও নিরাপত্তাকর্মীদের দেখা যায়নি।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার সরকার বলেন, ‘‘বিশাল এলাকা নিয়ে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের ভিতরেই চা বাগান, শালবন, রবার বাগান ও একাধিক জঙ্গল এলাকা রয়েছে। ফলে গোটা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে প্রচুর টাকা দরকার। আমরা প্রকল্প তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। অর্থ সাহায্যও চেয়েছি। আলোচনা করেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’