সুপ্রিয় দাস ও আলো দাস সরকার নিজস্ব চিত্র।
পুরভোটের লড়াই ঢুকে পড়ল পরিবারের মধ্যে। কোচবিহারের নতুন শহর ময়নাগুড়ির প্রথম পুরভোটে ভাশুরের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন ভাতৃবধূ। ভাশুর তৃণমূল প্রার্থী, অন্য দিকে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন ভাতৃবধূ।
ময়নাগুড়ির ইন্দিরা কলোনি মোড় এলাকায় একই উঠানে দুই পরিবারের বাস। পারিবারিক সমস্যার কারণে দুই পরিবারের হাঁড়ি আলাদা। পুরভোটেও দুই পরিবার থেকে পৃথক পৃথক দলের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন। ভাশুর সুপ্রিয় দাস (বাবন) তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে, তাঁর বিরুদ্ধে ওই একই ওয়ার্ডে পদ্মশিবিরের প্রার্থী হয়েছেন ভাতৃবধু আলো দাস সরকার।
প্রসঙ্গত ১৪২১ জন ভোটারের ওই ওয়ার্ড আরও কিছু কারণে উল্লেখযোগ্য। ওই ওয়ার্ডের দু’টি বুথের মধ্যে একটি মাধবডাঙা ১ নম্বর এবং অপরটি খগড়াবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় থেকে শহরে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর ফলে পরিবারটিও সদ্য পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা এলাকার আওতায় এসেছে।
তবে অভিজ্ঞতার নিরীখে এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী সুপ্রিয় দাস। তিনি ২০০৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা ১৫ বছর আরএসপি প্রার্থী হিসাবে পঞ্চায়েতে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তাই এলাকা হাতের তালুর মতো তাঁর চেনা।
২০১৩ সালে তৎকালীন আরএসপি বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার অব্যবহিত পরেই সুপ্রিয় দাস কোদাল-বেলচা ছেড়ে নাম লেখান জোড়াফুল শিবিরে। ভাতৃবধূর প্রতি পারিবারিক স্নেহ থাকলেও ভোটের ময়দানে যে এক ইঞ্চি জমি ছড়ার প্রশ্ন নেই, তা স্পষ্ট করে তৃণমূল প্রার্থী বলেন,‘‘ভোটের লড়াইটা সম্পর্কের নয়, বরং বিজেপির বিভেদ ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের। বাস্তবটা হল, যিনি বিজেপির প্রার্থী তাঁর অ্যাকাউন্টেও দিদির লক্ষ্মী ভান্ডারের টাকা ঢোকে।’’ তবে ভোটের লড়াইয়ে পরস্পরকে এক ইঞ্চি জমি না ছাড়লেও পরিবারিক সম্পর্ক যে অটুট থাকবে, তা জানিয়েছেন সুপ্রিয় দাস।
বছর ৩৬-এর গৃহবধূ বিজেপি প্রার্থী আলো দাস সরকার বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে ওঁর কাজ এলাকার মানুষ দেখেছেন, তাই এ বারে মানুষ আর ওই পথে যাবেন না। পরিবারের সদস্য হিসেবে বলতে পারি, পারিবারিক ভাবে বঞ্চিত এবং রেষারেষির শিকার হয়েই এলাকার বহু মানুষের মতো আমরাও রাজনৈতিক ভাবে ওঁর বিরোধী শিবিরে এসেছি। মানুষের চাহিদাকে সম্মান দিয়েই আমি এই লড়াই লড়ব এবং লড়াইয়ে বিজেপি-ই জিতবে।