মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
প্রায় দু’দশকের উপর চলা সমস্যা অবশেষে মিটতে চলেছে। বাগডোগরা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ এবং সম্প্রসারণের জন্য অবশেষে রাজ্য সরকার জমি দিল এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়াকে (এএআই)৷ গত ১৬ মার্চ রাজ্যের তরফে প্রায় ৯৮ একর জমি এএআইকে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বার বিমানবন্দরের জন্য বরাদ্দ ৬০০ কোটি টাকার নতুন টার্মিনাল বিল্ডিং-সহ একাধিক কাজ শুরু হবে। বৃহস্পতিবার বিমান মন্ত্রী ভি কে সিংহ দার্জিলিঙের সাংসদকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এর কয়েক দিন আগে জমি হস্তান্তর হতেই বাগডোগরা এএআই-এর তরফে নকশা দেখে টেন্ডার, ডিপিআর মতো কজের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনেকটাই কলকাতা বিমানবন্দরের আদলে বাগডোগরায় কাজ হবে।
জমির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন দার্জিলিঙের সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ তো বটেই, অসম, বিহার, সিকিমের মতো রাজ্য এবং নেপাল, ভুটানের মতো দেশের লোকজনও এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। পর্যটনের দিক থেকে বাগডোগরার গুরুত্ব অনেক। জমির জন্য কাজ হচ্ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’’
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বছরে সাড়ে ৭ লক্ষ যাত্রী ধারণ ক্ষমতার টার্মিনাল ভবন রয়েছে বাগডোগরায়। সম্প্রতি যাত্রী সংখ্যার হিসাবে দেখা গিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল থেকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অবধি, মোটামুটি এক বছরে ১৭ লক্ষ ৫০ হাজারের মতো যাত্রী এই বিমানবন্দরটি ব্যবহার করেছেন। করোনার আগে এই সংখ্যাটা বছরে ৩০ লক্ষ পার করে গিয়েছিল। এতেই নতুন টার্মিনাল ভবন-সহ সম্প্রসারণের জন্য জমির প্রয়োজন হয়। রাজ্যের কাছে এএআই জমি চায়। কিন্তু ওই এলাকায় রাজ্যের হাতে জমি না থাকায় একটি চা বাগানের জমির অংশ লিজ ফিরিয়ে তা সরকার অধিগ্রহণ করে এএআইকে তুলে দিল। এর জন্য দেশে প্রথমবার জমির জন্য ২৫ কোটি এএআই রাজ্যকে দেবে বলেও ঠিক হয়েছে।
গত দুই দশক ধরে জমি চিহ্নিতকরণ, মাপঝোঁক চললেও নানা জটে তা আটকে ছিল। সরকারের সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হয়, প্রয়োজনের ১০৫ একর নয়, আপাতত ৯৮ একর জমি হস্তান্তর করেই বিমানবন্দরের পরিকাঠামোর কাজ শুরু করা হবে। যে সাত একর জমি বাদ রাখা হচ্ছে, তার মধ্যে ৫.৯ একর বায়ু সেনার জমি। সেটি ব্যবহারের অনুমতি মেলেনি। বাগডোগরা বিমানবন্দর সামরিক বিমানবন্দর। এটিসি এবং রানওয়ে বায়ুসেনা নিয়ন্ত্রণ করে।
কয়েক বছর আগে বাগডোগরায় আইএলএস বা নাইট ল্যান্ডিং পরিষেবা চালুর জন্য রাজ্য সরকার এএআইকে ২৩ একর জমি দেয়। ওই জমিতে ক্যাট-২ ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম বসে। তার পরে বায়ুসেনা বিমানবন্দরের বিমান চলাচলের অনুমতি ভোর ৫টা থেকে রাত অবধি করে দেয়। আগামী ১১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল রানওয়ে সংস্কারের জন্য বিমানবন্দর বন্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে।
গরমের মরসুমে বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ রাখা নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে।