খাঁচায়: রসিকবিল মিনি জু-তে চিতাবাঘ। —নিজস্ব চিত্র।
এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে গুয়াহাটির লাচিতের মৃত্যুতে কালী, গৌরীদের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে বন দফতর। পাশাপাশি অন্য বন্যপ্রাণির স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারেও গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়েছে। রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বুধবার ওই ব্যাপারে আধিকারিকদের সতর্ক নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার গুয়াহাটির চিড়িয়াখানায় এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে লাচিত নামে বছর সাতেকের একটি বাঘের মৃত্যু হয়। তার জেরেই কোচবিহারের রসিকবিল মিনি জু’র বাসিন্দা কালী, গৌরী সহ চারটি চিতাবাঘকে নিয়ে পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের মধ্যে উদ্বেগ ছড়ায়। বিনয়বাবু অবশ্য বলেন, “উদ্বেগের কারণ নেই। তবু ওই বন্যপ্রাণিদের নিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছি।”
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় দশক আগে রসিকবিলে ওই চিতাবাঘ উদ্ধার কেন্দ্র তৈরি হয়। সেখানে তারজালির ঘেরাটোপের ভেতরে চিতাবাঘেরা জঙ্গলের পরিবেশে ঘুরে বেড়ায়। তবে খাওয়ার সময় তাদের নির্দিষ্ট খাঁচায় আনা হয়। কয়েক বছর আগে গোটা এলাকাটিকে মিনি জু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চিতাবাঘ ছাড়া হরিণ উদ্যান, পাইথন, ময়ূর উদ্ধারকেন্দ্র, ঘড়িয়ালের মতো প্রাণীদের আবাসস্থল রয়েছে। পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয় না। ফলে জ্বর বা কোনও অসুখের লক্ষণ হলে সময় মত চিকিৎসা নিয়েই সমস্যার আশঙ্কা থাকে।
পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসগ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “তার উপরে এত দিনেও উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণির চিকিৎসার উন্নত পরিকাঠামো তৈরি করা হয়নি। ফলে উদ্বেগ থাকে। মশাবাহিত সংক্রমণে বাঘের মৃত্যুতে সেই চিন্তা বাড়ল।”
এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা জানান, ওই মিনি জু-র লাগোয়া চত্বরে একাধিক জলাশয় রয়েছে। জু-এর ভেতরে কিছু অংশে নিকাশি ভাল নয়। বৃষ্টি হলে জল জমে। দফতর সূত্রের খবর, খাবারে অনীহা বা অন্য লক্ষণ দেখলেই দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারে কর্মীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মশার উৎপাত কমানোর চিন্তাভাবনাও হচ্ছে। কোচবিহারের ডিএফও বিমান বিশ্বাস বলেন, “পশু চিকিৎসকদের এনে ফের বন্যপ্রাণিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।”