—প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণে এখন পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে কমবেশি ৭৮ হাজার জন আক্রান্ত। মৃত্যুও হয়েছে কয়েকশো জনের। এই এলাকায় সংক্রমণে ভাইরাসের চরিত্র কেমন? কোন স্ট্রেন কাজ করছে? এ সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরোলজির রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি (ভিআরডিএল) থেকে বেশ কিছু নমুনা চাইল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ তথা আইসিএমআর। গত চার মাসে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের লালারসের নমুনার একাংশ তাঁরা চেয়েছেন। মাসে এমন ২০ জনের নমুনা তাঁরা চেয়েছেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরিতে সংরক্ষণ করে রাখা ওই সমস্ত নমুনা পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। ভিআরডিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, আইসিএমআর-এর তরফে তা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেই সেই মতো তাদের হাতে ওই সমস্ত নমুনা তুলে দেওয়া হবে। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর, এই চার মাসে পরীক্ষা করা লালারসের নমুনা থেকে তাঁরা ওই সমস্ত নমুনা চেয়েছেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান তথা ভিআরডিএল-এর দায়িত্বে থাকা অরুণাভ সরকার বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বর থেকে চার মাসের পজ়িটিভ কিছু নমুনা চেয়েছে আইসিএমআর। প্রতিমাসে যাঁরা পজ়িটিভ হয়েছেন, তার মধ্য থেকে ২০টি করে নমুনা তাঁরা চেয়েছেন। সেই মতো সেগুলো প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।’’ তিনি জানান, আইসিএমআর ‘সিকোয়েন্স’ করে দেখবে, এই এলাকায় করোনা ভাইরাসের কোনও স্ট্রেন বেশি সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। এবং কী কী ধরনের স্ট্রেন রয়েছে। সেটা নিয়ে গবেষণা করতে তারা নিয়ম মেনে ওই সমস্ত নমুনা চেয়ে পাঠিয়েছে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তারা বিষয়টি রাজ্যকে জানাবে। নির্দিষ্ট ব্যবস্থায় তথা ‘অ্যালিকট’ করে -৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ওই সমস্ত নমুনা ভিআরডিএল-এ রাখা রয়েছে।
ভাইরাসের স্ট্রেন ভেদে সংক্রমণের চরিত্রের তারতম্য ঘটে। যেমন, এর মধ্যেই ব্রিটেন স্ট্রেন নিয়ে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। এই স্ট্রেন দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা রাখে। বাচ্চা এবং মাঝবয়সীরা বেশি করে আক্রান্ত হয়। ব্রিটেন ফেরত কলকাতার এক যুবকের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণও মিলেছিল। যদিও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে এ ধরনের স্ট্রেনের কোনও যোগ এখন মেলেনি। তবে যে কোনও সময় তা আসার সম্ভবনাও উড়িয়ে দেননি চিকিৎসকেরা। তাই কোথায় কী ধরনের স্ট্রেন সংক্রমণ ঘটাচ্ছে, তা জানার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
ভিআরডিএলের করোনা পরীক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত শান্তনু হাজরা জানান, এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের চার হাজারের উপর মিউটেশন হয়েছে। তার মধ্যে ১৭টি টাইপ সংক্রমণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে নজরে এসেছে। এই এলাকায় কী ধরনের স্ট্রেনে সংক্রমণ বেশি হচ্ছে, সে সব নিয়ে এখনও কোনও পরীক্ষা হয়নি।