নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে কাজ বন্ধ করালেন গ্রামবাসীরা। — নিজস্ব চিত্র।
সরকারি কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগে আন্দোলনের নামলেন গ্রামবাসীরা। বন্ধ করে দেওয়া হল গ্রামীণ হাসপাতালের সংস্কার এবং নতুন ভবন তৈরির কাজ। ঘটনা ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মালদহের মানিকচক ব্লকের নুরপুর গ্রামীণ হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন বেহাল অবস্থায় পড়েছিল এই গ্রামীণ হাসপাতালটি। ঠিকঠাক পরিষেবা পেতেন না গ্রামবাসীরা। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগী হন। স্থানীয় বিধায়কের মাধ্যমে প্রায় ৫৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শুরু হয়েছিল গ্রামীণ হাসপাতালের সংস্কার এবং নতুন ভবন নির্মাণের কাজ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নতুন ভবন নির্মাণ এবং সংস্কারে যে ইট এবং সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিম্নমানের। এর পাশাপাশি, গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ যে, নির্মাণ বা সংস্কার কাজের ক্ষেত্রে কোনও নিয়মও মানা হচ্ছে না। আগে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দূরে মানিকচকে যেতে হত। তাই গ্রামীণ হাসপাতালের ভোলবদলের দাবি গ্রামবাসীদের দীর্ঘ দিনের। যাতে প্রয়োজনে হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যায়। দীর্ঘ দিন পর সেই দাবি পূরণের মুখে। কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু গ্রামবাসীরা হতাশ। তাঁদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে কাজও বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা।
গ্রামবাসী মহম্মদ সালেহার খান বলেন, ‘‘আমরা বহু দিন অপেক্ষা করার পর কাজ শুরু হয়েছে একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর জন্য। কিন্তু আমরা দেখছি, খুব খারাপ মালপত্র দিয়ে ভবনটি তৈরি করা হচ্ছে। এত নিম্নমানের ইট দিয়ে যদি দেওয়াল তৈরি হয়, তা হলে তা কত দিন টিকবে? আমরা চাই, সঠিক ভাবে কাজ হোক। জোড়াতালি দিয়ে কাজ আমরা চাই না। তাই কাজ বন্ধ করিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। ইঞ্জিনিয়ারেরা আসুন, কথা বলি।’’
আর এক বাসিন্দা শেখ মালেক বলেন, ‘‘জঘন্য মালপত্র। দু’নম্বরি মালপত্র দিয়ে হাসপাতালের সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। নতুন বাড়িও তৈরি হচ্ছে। খারাপ মানের সিমেন্ট এবং ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জন্য আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। সরকারের কাজ তো সরকার করেছে, কিন্তু ঠিকাদারেরা এই কাণ্ড করে রেখেছেন। এই ইট দিয়ে গোয়ালঘর তৈরি হয়, সেই ইট দিয়ে হাসপাতালের দেওয়াল তৈরি হলে তো যে কোনও সময় তা ভেঙে পড়ে যাবে রোগীর উপর!’’
এ বিষয়ে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ অভীকশঙ্কর কুমার জানান, এ বিষয়ে লিখিত কোনও অভিযোগ পাননি। তবে মৌখিক ভাবে বিষয়টি শুনেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় ষাট লক্ষ টাকার কাজ হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে লিখিত ভাবে জানানো হয়নি। মৌখিক ভাবে জানতে পেরে উপরতলাকে জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পেয়েছি।’’