ক্ষোভ: মালদহের গোকুলনগর কামাত গ্রামে কাটমানি ফেরতের দাবিতে তৃণমূল কর্মীর বাড়ির সামনে বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র
কাটমানি ফেরতের দাবিতে এবার বিক্ষোভ শুরু মালদহে। বুধবার দুপুরে ইংরেজবাজার ব্লকের অমৃতি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোকুলনগর কামাত গ্রামের দুই তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত বোর্ড যখন তৃণমূলের ছিল সেই সময় বাংলার ‘আবাস যোজনা প্রকল্পে’ বাড়ি তৈরির নামে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে কাটমানি নিয়েছেন ওই দুই কর্মী। সেই টাকা ফেরতের দাবিতেই এ দিনের বিক্ষোভ। খবর পেয়ে মিলকি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির মদতে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে পরিকল্পিতভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। বিজেপির পাল্টা দাবি, এখানে দলের কোনও ব্যাপার নেই। ভুক্তভোগীরাই কাটমানির টাকা ফেরত চাইছেন। কাটমানি ফেরতের দাবিতে এ রাতে ইসলামপুর শহরের কাউন্সিলরদের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখা দেখায় সিপিএমও।
ইংরেজবাজার ব্লকের অমৃতি গ্রাম পঞ্চায়েত এবারে বিজেপি দখল করেছে। গতবারে ছিল তৃণমূলের দখলে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই গোকুলনগর কামাত গ্রামের বাসিন্দা দুই তৃণমূল কর্মী বিজয় মণ্ডল ও রতন রজক। এ দিন দুপুরে ওই গ্রামের জনা পঞ্চাশেক পুরুষ-মহিলা হাতে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ওই দু’জনের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা বলেন, “গতবার গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড যখন তৃণমূলের ছিল তখন গ্রামে বাংলা আবাস যোজনায় ঘর তৈরির টাকা এসেছিল। প্রতিটি ঘর তৈরি পিছু এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে সরকারি বরাদ্দ হয়েছিল।’’ তাঁদের অভিযোগ, সেই বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে ওই দু’জন ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে কাটমানি নিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, কারও কাছ থেকে আবার কাটমানি নিয়ে নিলেও তাঁরা বাড়ি তৈরির কোনও বরাদ্দও পায়নি। বিক্ষোভ চরমে পৌঁছলে মিলকি ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিজয় ও রতন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে।
এদিকে, তৃণমূলের ইংরেজবাজার ব্লকের সভাপতি কল্যাণ মণ্ডল বলেন, “কাটমানির নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বিজেপি চক্রান্ত করে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে। ওরা দু’জন সাধারণ তৃণমূল কর্মী এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজকর্মের সঙ্গে তাদের কোনও যোগই ছিল না।” বিজেপির জেলা নেতা সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, বিজেপির কোনও যোগই নেই। ভুক্তভোগীরাই এ দিন টাকা ফেরতের দাবিতে ওই দুই তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও করে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ হবে।
ইসলামপুরের থানা কলোনির কাউন্সিলর সত্যেন দাস ও লোকনাথ কলোনির কাউন্সিলরের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ দেখানো নিয়ে সিপিএমের এক নম্বর এরিয়া কমিটির অন্যতম সদস্য তাপস দাস বলেন, ‘‘ওই কাউন্সিলররা বিভিন্ন এলাকা থেকে কাজের বিনিময়ে টাকা নিয়েছেন। সেই টাকা ফেরতের দাবিতে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি রেখেছি।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।