জলপথ: রাস্তা না পুকুর! কোচবিহারে। —নিজস্ব চিত্র।
আরও একবার অসম লড়াইয়েই নেমেছেন জারিধরলা, দরিবস।
নদীতে জল বাড়তে শুরু করলেই আতঙ্ক শুরু হয় ওই দুই গ্রামে। তার সঙ্গেই লড়াই করে মাটি ঘর-সম্পত্তি রক্ষায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন এই দুই গ্রামের বাসিন্দারা। বুধবার জলের গতি আরও বাড়তে থাকায় ভিটেমাটি ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন বাসিন্দাদের অনেকে। দিনহাটার গীতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই দুটি গ্রামের মধ্যে পূর্ব জারিধরলা গ্রামের ৩০টি পরিবার বাংলাদেশের মোগলহাটে আশ্রয় নিয়েছেন।
যদিও প্রশাসনিক ভাবে এখনও ওই কথা স্বীকার করা হয়নি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই তিরিশটি পরিবারকে গ্রাম থেকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আপাতত ত্রাণশিবিরে ৭০০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ চক্রবর্তী বলেন, “গ্রামের সমস্ত মানুষকে নিরাপদ জায়গায় আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিএসএফের সঙ্গেও কথা হয়েছে। প্রয়োজনে স্পিড বোট নামানো হবে।”
গত বছর বন্যায় ওই দুই গ্রামের তিন হাজার মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজে ওই এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেছিলেন। প্রশাসনের তরফেও ত্রাণসামগ্রী সাহায্য করা হয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, ওই দুই গ্রামে প্রায় ছয় হাজার মানুষের বাস। ধরলা নদী পার হয়ে গ্রামে যাতায়াত করতে হয়। বর্তমানে ধরলা নদীর জল বিপদসীমার কাছে দিয়ে বইছে। ওই দুই এলাকার বহু মানুষের বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। আগাম অনেকে গীতালদহে এসে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বাকিদের বেশিরভাগ ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু জল আরও বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আমিনুল হক বলেন, “আসলে সবাই ভিটেমাটি শেষ পর্যন্ত আঁকড়ে ধরে রাখেন। আর নদীর জল এমন বেড়ে যায়, অনেকেই এপারে আসতে পারেন না। ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের এলাকা খুব কাছে থাকায় সেখানে তাঁরা আশ্রয় নেন।’’