কেউ জলের মধ্যে আগুন জ্বেলে তাক লাগাল। কেউ আবার সংখ্যার সঙ্গে কোণের সম্পর্ক দেখাল। কারও থিম পরিবেশ দূষণ। কেউ আবার দেখালেন ‘ক্যামিকেল সানসেট’ কিংবা ‘ক্লক অফ নাইন’। অনেকে আবার মজেছিল পছন্দের বই সংগ্রহে। রবীন্দ্রজয়ন্তীতে কবিগুরুর বিজ্ঞান চেতনা বিষয়ক প্রদর্শনীতে সময় কাটাল পড়ুয়ারা। শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলা সদরে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসাবে নেওয়া প্রথম জ্ঞান ও বিজ্ঞান মেলার সূচনা হয় কোচবিহারে।
জেলা সদরের রামভোলা হাইস্কুলে আয়োজিত তিন দিন ব্যাপী ওই মেলা ঘিরে এমন ভাবেই এক সঙ্গে বই ও বিজ্ঞান মডেল নিয়ে মেতেছে পড়ুয়ারা। শনিবার রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান প্রকল্প দফতরের উদ্যোগে রাজ্যের প্রথম জেলা হিসাবে কোচবিহারে শুরু হওয়া ওই মেলার উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া। আয়োজকরা জানান, আগামী দুই মাস ধরে পর্যায়ক্রমে রাজ্যের সব জেলায় ওই মেলার আসর বসবে। ৭ জুলাই মেলা শেষ হবে দক্ষিণ ২৪ পরগণায়। এদিন ওই মেলা উপলক্ষে একটি মশাল প্রজ্জ্বলন করা হয়। বিভিন্ন জেলার অনুষ্ঠান মঞ্চ ঘুরে ওই মশাল দক্ষিণ ২৪ পরগণায় পৌঁছবে।
রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের উপ অধিকর্তা দিব্যগোপাল ঘটক বলেন, “এক সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের জ্ঞান বিকাশে বই কেনা ও বিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহ বাড়াতে ওই উদ্যোগ।” কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক চিরঞ্জীব ঘোষ বলেন, “জ্ঞান ও বিজ্ঞান একে অন্যের পরিপূরক। এই মেলার মাধ্যমে দুই ক্ষেত্রেই প্রতিভার স্ফূরণ হবে।” এদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোচবিহারের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবাশিস ভট্টাচার্য, রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান প্রকল্প দফতরের আধিকারিক বরুণ মজুমদার, তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা আহ্বায়ক পার্থপ্রতিম রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উদ্যোক্তারা জানান, কোচবিহারের ৪০টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি বিজ্ঞান বিষয়ক ১২০টি মডেলের প্রদর্শনী মেলার অন্যতম আকর্ষণ। এ ছাড়াও বই কিনতেও উৎসাহী পড়ুয়াদের নজরকাড়া ভিড় ছিল।
কোচবিহার জেলা জ্ঞান ও বিজ্ঞান মেলার আয়োজকদের তরফে দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, ১১ মে পর্যন্ত মেলা চলবে। তবে এবারের মেলার আয়োজন ঘিরে গ্রামীণ এলাকার পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, অন্য বার মহকুমাস্তরেও একাধিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ বই মেলার আয়োজন করা হয়। তাতে প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের অংশ গ্রহণের সুযোগ অনেক বেশী থাকে। এবার শুধু জেলা স্তরে মেলা যুক্ত হওয়ায় গ্রামীণ এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই সামিল হতে পারবেনা।