প্রতীকী ছবি।
বাম বিধায়ক তিনি। আর সে কারণেই এলাকার উন্নয়নে তাঁর বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচ করা হচ্ছে না—এমনই অভিযোগ তুললেন চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর)।
আর এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করেই প্রশাসন ও বিধায়কের চাপানউতোর শুরু হয়েছে। ২০১৮-’১৯ এবং ২০২০ অর্থবর্ষে বিধায়কের উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ভিক্টর। ফলে, এখনও জেলাশাসকের দফতরে চাকুলিয়া এলাকার উন্নয়ন তহবিলে এক কোটি বেশি টাকা পড়ে রয়েছে বলে দাবি বিধায়কের। এই পরিস্থিতে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও লিখিত ভাবে বিষয়টি জানাবেন বলে তিনি জানান। জেলা প্রশাশন পাল্টা দাবি করেন, বার বার বলা সত্ত্বেও বিধায়ক কোন প্রকল্প জমা করেননি। রাজ্যের শাসক দলের পাল্টা দাবি, জনসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েই এখন এ সব অভিযোগ তুলছেন ফব বিধায়ক।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, করোনার জেলার সব বিধায়কের টাকা না দেওয়ার নির্দেশ ছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় উন্নয়নের টাকা ছেড়ে দেওয়া হয়। ভিক্টরের দাবি, পিতানু নদীতে একটি সেতু, কালভার্ট সেতু সমেত এলাকার বেশ কিছু সড়কের কাজের বিধায়ক তহবিলের জন্য জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত প্রস্তাব কার্যকর করছে না বলে অভিযোগ বিধায়কের।
রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, ‘বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল প্রকল্পে’ একজন বিধায়ক বছরে ৬০ লক্ষ টাকা পান। ওই অর্থ রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকের কাছে পৌঁছে দেন। এরপর বিধায়ক এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রকল্প ও কত টাকা খরচ হবে তার উল্লেখ করে পাঠিয়ে দেন জেলাশাসকের কাছে। কিন্তু চাকুলিয়ায় এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্পে যে সব প্রকল্পের প্রস্তাব তিনি পাঠিয়েছিলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ বিধায়কের।
বিধায়কের তহবিলের অর্থ প্রশাসন খরচ না করায় শাসক দলের রাজনীতিই দেখছেন বামেরা। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক গোকুল রায় বলেন, ‘‘আমাদের বিধায়ককে নিষ্ক্রিয় বলে অপবাদ দেওয়ার জন্য তৃণমূলের এ সব করছে।’’
জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা বলেন, ‘‘বিধায়ক নিয়ম মেনে প্রস্তাব জমা দেননি। প্রস্তাব এবং ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদন করা—এ সব কাজ বিধায়ককে করার কথা, তিনি তা করেননি।’’
তৃণমূলের চাকুলিয়া বিধানসভার তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর মিনহাজ আরফিন আজাদ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কারণে ওই সব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে এটা ঠিক কথা নয়। বিধায়ক তাঁর তহবিলের টাকা খরচ করতে পারেননি সেটা তাঁর ব্যর্থতা। তিনি এলাকার মানুষকে বঞ্চিত করেছেন।’’ আবার যখন ভোট হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে, তখন এ ধরনের অভিযোগ তোলাও তাৎপর্যপূর্ণ, বলছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।