মোহিত সেনগুপ্ত
উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তকে নোটিস পাঠালেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালি। তাঁর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন মোহিত। সেই অভিযোগেরই জবাব দিতে বিশ্ববিদ্যালয়েই সাংবাদিক বৈঠক করেন উপাচার্য। সেখানেই তিনি মোহিতের সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করেন।
উপাচার্য এ দিন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি নিয়ম মেনেই অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ, বিভিন্ন উন্নয়নের কাজে টেন্ডার প্রকাশ, স্নাতকস্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া-সহ সমস্ত কাজ করেন। মোহিত মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়কে বদনাম করার চেষ্টা করছেন বলে তাঁর অভিযোগ। এরপর তিনি জানিয়ে দেন, এ দিনই ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব চক্রবর্তী মোহিতকে তাঁর অভিযোগের সমর্থনে তিনদিনের মধ্যে প্রমাণ চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে তিনি সেই প্রমাণ পেশ না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে আলোচনা করে প্রয়োজনে মোহিতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে মোহিতের পাল্টা দাবি, এ দিন সকালে উপাচার্য তাঁকে ফোন করেন। তিনি তাঁর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলায় হতাশা প্রকাশ করেন উপাচার্য। মোহিতের কথায়, ‘‘উপাচার্য, দুই অধ্যাপক এবং আরও কিছু অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে কাটমানি নেওয়ার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় আমার কাছে কাটমানি নেওয়ার প্রমাণ চেয়ে নোটিস পাঠাতেই পারে না। আমিও বিশ্ববিদ্যালয়কে সেই প্রমাণ দিতে বাধ্যও নই। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কোনও নোটিস পাঠালে তা আমি গ্রহণ করব না। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে আমার বিরুদ্ধে আদালতে মানহানি অথবা মিথ্যা অভিযোগ তোলার মামলা দায়ের করতে পারে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার প্রমাণ হাতে নিয়ে ওঁদের বিরুদ্ধে আদালতে আইনি লড়াই করতে প্রস্তুত।’’
জেলায় কাটমানি সংক্রান্ত বিশৃঙ্খলা রুখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দাবিতে বুধবার মোহিতবাবুর নেতৃত্বে জেলা কংগ্রেস জেলাশাসককে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। ওই কর্মসূচির পর মোহিত উপাচার্য, দুই অধ্যাপক তাপস মোহান্ত, অশোক দাস ও অধ্যাপকদের একাংশের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। মোহিতের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্তরা অনলাইনে টেন্ডার না ডেকে ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা কাটমানি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দিয়েছেন। অভিযুক্ত অধ্যাপকেরা পড়ুয়াদের একাংশের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা কাটমানি নিয়ে তাঁদের স্নাতক স্তরে ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছেন।