যোগসূত্র: তিস্তা নদীর উপর করোনেশন সেতু। নিজস্ব চিত্র
তিস্তায় করোনেশন সেতুর উপর চাপ কমতে চলেছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের আগামী ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের জাতীয় পরিকাঠামোগত প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সেবকে তিস্তায় বিকল্প সেতু।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠীর সম্মতিতে রেলে জমি হস্তান্তর করে সেতুর বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট বা ডিপিআর তৈরি করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে তিনি দেখা করে কয়েকটি প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে কথা বলেন। এর মধ্যে শিলিগুড়ির মাটিগাড়া থেকে দার্জিলিং মোড় সেবক অবধি ফোর-লেন উড়ালপুল, সেবক থেকে সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ছাড়াও সেবকে তিস্তায় দ্বিতীয় সেতুর বিষয়টিও ছিল।
সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রায় ১.৩৪ কিলোমিটার নতুন সেতু তৈরির পরিকল্পনা চূড়ান্ত। সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য রেলের জমি হস্তান্তরে মন্ত্রিগোষ্ঠী সম্মতি দিয়েছে। এখন বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির পর টাকার অনুমোদন করা হবে। এর পরে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার রাস্তা ও সেতু প্রকল্পগুলি নিয়ে তিনি গডকড়ীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
সাংসদ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এই অঞ্চলের সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে বদ্ধপরিকর। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শিলিগুড়ির ঘিরে জাতীয় সড়কগুলির চেহারা বদল হয়ে যাবে। করোনেশনের বিকল্প সেতু কেন্দ্র তৈরি করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।’’
১৯৩৭ সালে কিং জর্জ এবং রানি এলিজাবেথের ‘করোনেশন’কে সামনে রেখে সেবকে সেতুর নাম হয় করোনেশন সেতু। ১৯৪১ সালে সেই সময় প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচে সেতুর কাজ হয়। তিস্তার মতো খরস্রোতা নদীর উপর নকশার দিক থেকে এই সেতু গোটা বিশ্বে সমাদৃত। সেতুর দুই পাশে বাঘের মুর্তি থাকায় একে বাঘপুলও বলা হয়। ২০১১ সালে পূর্ত দফতর সেতুতে ফাটল লক্ষ করে। ঝুঁকি নিয়ে মেরামতের পর কয়েক বছর আগে সেতুটি দিয়ে ১০ টনের উপর গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। ডুয়ার্সের সঙ্গে শিলিগুড়ি, কালিম্পং, সিকিমের সংযোগ রক্ষাকারী সেতুর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ছড়ায়। ফলে সেবকে দ্বিতীয় সেতুর দাবি ওঠে।
এলাকা চিহ্নিত করার পর নতুন করে তিস্তায় আর একটি সেতু হলে ডুয়ার্সের দূরত্ব কমবে। এতে রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। রেলের জমি প্রথমে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠী জমি হস্তান্তরে সায় দিয়েছে। পূর্ত দফতরের অফিসারেরা জানান, সেবক বাজারের দিক সেতুটি ও পারে এলেনবাড়ি চা বাগান এলাকায় দিকে যাবে। এতে ডুয়ার্সের সঙ্গে শিলিগুড়ির দূরত্বও কমবে।