আহত পুলিশকর্মী। বৃহস্পতিবার, সাহাপুর সেতু মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
ইংরেজবাজার শহরে চলাচলের দাবিতে পরিবার নিয়ে টোটো চালকদের পথ অবরোধের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল পুরাতন মালদহের সাহাপুরের সেতু মোড়। অভিযোগ, দুপুর একটা নাগাদ অবরোধ তুলতে গেলে বৃষ্টির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে দেদার ইট-পাথর ছোড়ে টোটো চালকদের একাংশ। জখম হন চার পুলিশকর্মী। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের একটি গাড়িতে। শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, এমনকি, কাঁদানে গ্যাসের শেলও ছোড়ে বলে অভিযোগ। যদিও লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার অভিযোগ স্বীকার করেনি পুলিশ। এ দিন জখম চার পুলিশকর্মীকে চিকিৎসার জন্য মালদহ মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের উপর হামলা, সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে মালদহ থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত চার পুলিশ কর্মীর মধ্যে দু’জন র্যাফের কর্মী। তাঁদের নাম নিরঞ্জন বর্মণ (৪১) এবং চৈতন্য দাস (৩৩)। বাকি দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম মহম্মদ মহিদুর রহমান (৩৩) এবং ফরিদা খাতুন (২৫)। তাঁদের মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত রয়েছে।
গত ৫ জুলাই থেকে মালদহ জেলা সদরের ইংরেজবাজার শহরে গ্রামীণ এলাকার টোটো চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। এর পর থেকেই ইংরেজবাজার শহরে টোটো চলাচলের দাবিতে পুরাতন মালদহের সাহাপুর সেতু মোড়ে মালদহ-নালাগোলা রাজ্যসড়কে প্রায়দিনই অবরোধ করেন টোটো চালকেরা। বৃহস্পতিবারও সকাল ৯টা থেকে ওই রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন টোটো চালকেরা। এ দিনের আন্দোলনে টোটো চালকদের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের লোকজনও সামিল হন। সকাল থেকে একটানা আন্দোলনের জেরে ওই এলাকায় রাজ্যসড়ক রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায়। এর পরেই দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ মালদহ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশি আশ্বাসেও টোটো চালকেরা অবরোধ তুলে নেননি। এরই মধ্যে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের বচসা শুরু হয়। সে সময়ে আচমকাই বৃষ্টি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময়ে টোটো চালকদের একাংশ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।
মালদহ জেলা টোটো চালক সংগঠনের সম্পাদক মুকুল কর্মকার বলেন, ‘‘সাহাপুর সেতু মোড়ে টোটো চালকদের সঙ্গে একটা গোলমাল হয়েছে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে, লাঠি চালিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। শহরে গ্রামীণ এলাকার টোটো চলাচল নিয়ে কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। সুষ্ঠ ভাবে আন্দোলন করার পরেও পুলিশ কেন লাঠিচার্জ করল, জানি না। এ দিন তিনজন মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ।’’ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘টোটোচালকদের অবরোধ আন্দোলন তুলতে গিয়ে চারজন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে । তবে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন।’’