পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সভা করে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তার চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল চোপড়া। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থানার ঘিরনিগাঁও পঞ্চায়েত এলাকা কংগ্রেস-তৃণমূলের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল।
এলাকায় পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য পুলিশের হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলার বিষয়টি মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘দুই পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে দূর থেকে পাথর ছুড়ছিল। চকলেট পটকাও ফাটাচ্ছিল। ঘটনার খবর পুলিশ পৌঁছলে পালিয়ে যায় তারা।’’
বুধবারই চোপড়ার দাসরপাড়ায় সভা করে পরিবহণমন্ত্রী কড়া ভাষায় বার্তা দিয়েছিলেন, বন্দুক কারও হাতে থাকবে না। বোমাবাজিও চলবে না। তার পরেও চোপড়া উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘিরনীগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। প্রধান হাসনা বানুর স্বামী মহিনুদ্দিন মির্জা বলেন, ‘‘প্রধান গ্রাম পঞ্চায়েতে কিছু সদস্য নিয়ে ঢুকেছিলেন। সেখানে ঘণ্টাখানেক থাকার পরই পঞ্চায়েতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে বাইরে গুলি-বোমা চালানো হয়। কংগ্রেসের লোকজনই এসব করছে।’’ যদিও অভিযোগ মানতে চাননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। চোপড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অশোক রায় বলেন, ‘‘এ দিন উদরালই মোড় দিয়ে পঞ্চায়েত সদস্যেরা গ্রাম পঞ্চায়েতে যাচ্ছিলেন। নির্বাচন ঠিকমতো না করে পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করায় ক্ষিপ্ত বাসিন্দারাই তাদের পথ আটকেছিলেন। পুলিশ গেলে তাদের সঙ্গে গন্ডগোল বাধে বলেই শুনেছি। আমাদের কেউ কোনও গন্ডগোল করেননি।’’
অশোকবাবুর অভিযোগ, ‘‘পরিবহণমন্ত্রী উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। সভার পর এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করেছিলাম। ঠিক সেটাই হল।’’ কংগ্রেসের দাবি, মহসিন মরগুব আলম নামে তাদের এক কংগ্রেস কর্মীকে দু’দিন আগে মিথ্যা করে মাদক মামলায় গ্রেফতার করেছে চোপড়া থানার পুলিশ। তারই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার লালবাজার এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। তবে এ দিন গন্ডগোলের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন চোপড়ার বিধায়ক হামিদূল রহমান। তিনি বলেন, ‘‘তেমন কিছু হয়েছে বলে শুনিনি।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণার পর থেকে বারবারই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চোপড়া। নির্বাচন দিন ঘোষণার পর পরই লক্ষ্মীপুরে কংগ্রেস-তৃণমূলের গন্ডগোল বাধে। কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে শাসক দলের কর্মীরা বারবারই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। সব থেকে বেশি গন্ডগোল, গুলি-বোমার ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুর, দাসপাড়া ও ঘিরনীগাঁও এলাকায়। তৃণমূলের এবং কংগ্রেসের একজন করে কর্মী দু’টি আলাদা গোলমালের ঘটনায় নিহত হয়েছেন।