ধস্তাধস্তি: জাতীয় সড়কে উত্তেজনা। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দু’ঘন্টা আগেই কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের আইন অমান্য আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মালদহের ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়িতে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই রথবাড়ি এলাকায় মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে দেয় কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। মিনিট দশেক ধরে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে থাকায় যানজট তৈরি হয়। দুর্ভোগে পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। আইন অমান্য আন্দোলনে প্রায় তিন হাজার নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও গ্রেফতার ঘোষণা করার পরেই পুলিশ নেতা-কর্মীদের ছেড়ে দেয়।
এ দিন দুপুর ২টা নাগাদ মালদহের জেলা ক্রীড়া সংস্থার ময়দানে প্রাশনিক সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরে মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। আর সেই কলেজ অডিটোরিয়াম থেকে মাত্র দশ মিটার দূরে রথবাড়ি এলাকায় দুপুর ১২টা নাগাদ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকে আইন অমান্য ও জেল ভরো আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিন সকাল থেকেই মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের সমর্থকেরা হাজির হতেই ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এমনকী, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যাতে তারা উঠতে না পারে তার জন্য পৃথক ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। আন্দোলনকারীরা সেই ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। আর তা নিয়েই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে একাধিক কর্মী সমর্থক রাস্তার উপরে পতাকা নিয়ে বসে পড়েন। পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধ কারীদের সরিয়ে দেয়। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের মালদহের আহ্বায়ক দেবজ্যোতি সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। মালদহের পুলিশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রশংসা নেওয়ার জন্য মাঝ পথেই আমাদের আন্দোলন আটকে দেয়।’’ আগামীতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
ঘটনা হল, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরোধিতায় উত্তরবঙ্গের সর্বত্র একই কর্মসূচি পালন করেন বামেরা। শিলিগুড়িতেও বাঘা যতীন পার্ক থেকে মিছিল বার হয়। বামফ্রন্টের শরিকেরা ছাড়াও নকশালদের, এসইউসিআই, ১২ জুলাই কমিটির কর্মীরা কর্মসূচিতে অংশ মিছিল জংশনে মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে পৌঁছতেই পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশের একটি ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে মহকুমাশাসকদের দফতরের সামনে তাঁদের আটকায় পুলিশ। শতাধিক বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের পর সেখানেই মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন পুলিশ অফিসারেরা। আন্দোলনকারীদের পক্ষে সমন পাঠক, গৌতম ঘোষেরা জানান, কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক শ্রমিক বিরোধী নীতি নিচ্ছে। ন্যূনতম মজুরি ঠিক হচ্ছে না।
উত্তেজনা ছড়ায় রায়গঞ্জেও। এদিন দুপুরে জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অপূর্ব পাল ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিপিএম, বামফ্রন্ট ও বামপন্থী বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কয়েকশো নেতা কর্মী শহরে মিছিল করে পুরবাসস্ট্যাণ্ড চত্বরে পথ অবরোধ করার চেষ্টা করে। কিন্তু ওই মিছিলটি বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার মুখে পুলিশ আটকে দেয়। ধ্বস্তাধ্বস্তি বেঁধে যায়।