Tea

খামখেয়ালি আবহাওয়ার জেরে দাম নেই ‘দ্বিতীয় ফ্লাশ’-এর

এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকেই সাধারণত দ্বিতীয় ফ্লাশের পাতা চলে আসে। এ বছর প্রথম ফ্লাশের পাতার উৎপাদনও মার খেয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় চা পাতার গুণমান এ বার ভাল ছিল না।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ ০৭:৪০
Share:

মাকড়সার আক্রমণ চা গাছে। যার জেরে সবুজ পাতা লাল হয়ে গিয়েছে। মালবাজারের শোনগাছি চা বাগানে। নিজস্ব চিত্র

অনাবৃষ্টির পরে দিনের মেঘলা আকাশ। যে দিন রোদ ওঠে, সে দিন রাতে হঠাৎ করে তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে। দ্বিতীয় ফ্লাশের চা পাতার সঙ্কট যেন কাটছেই না!

Advertisement

মাসখানেক ধরে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ার পরিবর্তনের কোনওটাই চায়ের জন্য সুখকর হচ্ছে না বলে দাবি। কখনও বৃষ্টি হচ্ছেই না, কখনও ঝড়ে গাছের ক্ষতি হচ্ছে, তাপমাত্রার ওঠানামাও চায়ের উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দামে। যে দ্বিতীয় ফ্লাশের কদর কখনও কখনও প্রথম ফ্লাশকেও টেক্কা দেয়, সেই পাতার দাম পড়েছে তলানিতে। গত ১ এপ্রিল থেকে কলকাতা এবং শিলিগুড়ির কেন্দ্রে যতগুলি নিলাম হয়েছে সর্বত্রই পাতার দাম মিলেছে অনেকটাই কম। সব মিলিয়ে মন ভাল নেই উত্তরবঙ্গের চা বাগানের।

এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকেই সাধারণত দ্বিতীয় ফ্লাশের পাতা চলে আসে। এ বছর প্রথম ফ্লাশের পাতার উৎপাদনও মার খেয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় চা পাতার গুণমান এ বার ভাল ছিল না। যদিও এপ্রিলের শুরু থেকে বৃষ্টি হতে শুরু করে। তাতে অনেকেই ভেবেছিলেন, এ বার অন্তত দ্বিতীয় ফ্লাশের চা পাতার মান ভাল হবে। রাতের দিকে বৃষ্টি হলেও দিনের বেলায় আকাশ মেঘে ঢাকা থাকছে। সে কারণে রোগ-পোকার আক্রমণ বেড়েছে। আবার রাতের দিকে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে অনেকটাই। চায়ের উৎপাদনের জন্য দিন-রাতের তাপমাত্রার যে হেরফের প্রয়োজন, তার থেকে হয় কম, নয়তো বেশি থাকছে সপ্তাহ দুয়েক ধরে। সে কারণেই বাগানে চা পাতায় রোগ-পোকার আক্রমণ বেড়েছে।

Advertisement

চা গাছের পাতায় যে পোকার আক্রমণের কারণে পাতা লাল হয়ে যাচ্ছে, সেটিকে ‘রেড স্পাইডার’ বলা হয়। চা পাতায় ‘লুপারে’রও আক্রমণ শুরু হয়েছে। ডুয়ার্সের বেশিরভাগ বাগানের দ্বিতীয় ফ্লাশের চা পাতা ‘লুপারে’ আক্রান্ত। এই দুই মূল রোগ-পোকা ছাড়াও একাধিক রোগে ধরেছে চা পাতাকে। চা মহল্লার দাবি, আবহাওয়ার পরিবর্তন ছাড়া এই পোকা নির্মূল করা সম্ভব নয়। কারণ, পাতার গুণগত মান বজায় রাখতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা সম্ভব নয়। ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সচিব সঞ্জয় বাগচী বলেন, “একাধিক রোগ-পোকা চা গাছে হামলা করেছে। আবহাওয়া এ বারে এতটুকুও অনুকূল নয়। দিন দিন দাম কমছে।”

শিলিগুড়িতে গত সপ্তাহের শেষ নিলামে গত বছরের থেকে গড়ে অন্তত ৩০ টাকা দাম কম মিলেছে, কলকাতায় ৩৮ টাকা দাম কম পেয়েছে উত্তরের চা। ছোট চা বাগানগুলির সংগঠনের তরফে বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “পাতার পরিমাণও কমেছে। অনেক কারখানা উৎপাদনই করতে চাইছে না। এ বছর এখনও যা আবহাওয়া তাতে দ্বিতীয় ফ্লাশের চায়ের দুঃসময় বলাই যেতে পারে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement