পরীক্ষাপত্রে হিন্দি গানের কলি, প্রেমপত্র লেখা দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আইন কলেজের ১০ পরীক্ষার্থীকে দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড করল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ওই পরীক্ষার্থীরা আগামী দু’বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পরীক্ষাতেই বসতে পারবে না। তার পরে অবশ্য তাঁদের ফের পরীক্ষায় বসতে অবশ্য কোনও বাঁধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ১০ পরীক্ষার্থীর বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটি পরীক্ষার্থীদের শুনানির ভিত্তিতে এই সুপারিশ করে। পরে তাতে সিলমোহর দেন উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র। মঙ্গলবার সেই নির্দেশ ওই কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এ বছরের জানুয়ারি মাসের শেষে বালুরঘাট আইন কলেজের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় সেমেস্টারে যে ১৮২ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেয়, তাঁদের মধ্যে সব বিষয়ে পাশ করেছেন মাত্র ২৫ জন। ৪৪ জন একটি বিষয়ে ও ২২ জন দুটি বিষয়ে ‘ব্যাক’ পান। বাকি ৯১ জনই ফেল করেন। আসল চমক ছিল দ্বিতীয় সেমেস্টারের ১০ পরীক্ষার্থীর খাতায়। দেখা যায়, চার পরীক্ষার্থী খাতার পাতায় পাতায় প্রেমপত্র লিখে রেখেছেন। দুজন প্রেমপত্রের সঙ্গে জুড়ি দিয়েছেন কিশোরকুমারের হিন্দি গানের কলি। দুজন আবার পরীক্ষার দিনের ঘটনাবলী নিয়ে গল্প লিখেছেন। আর দুজন আপত্তিকর ভাষাও ব্যবহার করেছেন।
চমকের অবশ্য বাকি ছিল। এই পরীক্ষার্থীরাই তাঁদের পাশ করানোর দাবিতে ২৭ জানুয়ারি বালুরঘাট আইন কলেজে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন। তা নিয়ে বিভিন্নমহলে নিন্দারও ঝড় ওঠে। শেষে সাংসদ অর্পিতা ঘোষের কড়া মনোভাব ও শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের নির্দেশে ওই পরীক্ষার্থীরা পিছু হটেন।
ওই ঘটনায় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিয়ামককে আহ্বায়ক করে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা ওই দশ পরীক্ষার্থীকে শুনানির জন্য ডেকেছিলেন। তাঁদের মধ্যে আট জন এলেও বাকি দু’জন আসেননি। নিয়ামক সনাতন দাস এ দিন বলেন, ‘‘শুনানির পরে আমরা ওই দশ জনকেই দুবছরের জন্য সাসপেন্ড করার সুপারিশ করি।”