উৎসবের উদ্বোধনে উদয়ন গুহ, বুলুচিক বরাইক, এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী, কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
বাংলা ভাগের দাবির প্রসঙ্গ টেনে ডুয়ার্স উৎসবের মঞ্চ থেকে নাম না করে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বার্তা দিলেন, ডুয়ার্স উৎসব যাতে জাতীয় স্বীকৃতি পায়, এখন থেকেই সেই চেষ্টা শুরু করা উচিত।
আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে সপ্তদশ ডুয়ার্স উৎসব। সূত্রের খবর, বাম আমলে উৎসবের একচেটিয়া আধিপত্য মূলত সিপিএম নেতাদের হাতেই ছিল। কিন্তু রাজ্যে পালা বদলের পরে তা তৃণমূল নেতাদের হাতে চলে যায়। এরই মধ্যে গত লোকসভা নির্বাচনে তো বটেই, এমন কি বিধানসভা নির্বাচনেও জেলার সব ক’টি আসনেই বিজেপির হাতে পর্যদস্তু হতে হয় তৃণমূলকে। পাশাপাশি করোনা আবহে গত দুই বছর এই উৎসব বন্ধও থাকে। সব মিলিয়ে এ বার ফের উৎসব হবে কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দিন সেই প্রসঙ্গ টানেন উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “আমরা সবাই আশা করেছিলাম, যাঁরা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ-বিধায়ক রয়েছেন, তাঁরা দায়িত্ব নিয়ে উৎসব করবেন। কিন্তু তাঁরা কোনও উদ্যোগ নিলেন না।” নিজের বক্তব্যে আবার সৌরভের এই কথার প্রসঙ্গ টেনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, “যেখানে ঐক্য বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গান গাওয়া হবে, সেখানে যাঁরা বিচ্ছিন্নতাবাদ বা অনৈক্যের স্বপ্ন দেখেন, তাদের পদধূলি পড়বে না।”
একই সঙ্গে উদয়ন বলেন, “যারা উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার কথা বলেন, যারা কামতাপুর রাজ্যের কথা বলেন কিংবা যারা কেন্দ্রশাসিত কোচবিহারের কথা বলেন, তাদের কাছে এই মেলার মাধ্যমেই একটা বার্তা পৌঁছে যাওয়া উচিত যে, বাংলার মানুষ সবাই ঐক্যবদ্ধ। সংস্কৃতির মিলনের মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে বাংলাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।” উদয়নের বক্তব্য নিয়ে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “ডুয়ার্স উৎসব যখন শুরু হয়েছিল, তখন আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক এই জেলায় থাকতেন না। এই উৎসব নিয়ে তখন তাঁর কোনও ধারণাও ছিল না। বরং শুরু থেকে আরও অনেকের সঙ্গে আমি নিজেও এই উৎসবের নানা দায়িত্ব পালন করেছিলাম। এখন বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধি হওয়াতেই প্রশাসন আমাদের এড়িয়ে চলে।”
প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবি ঘোষ এ দিন বলেন, “ডুয়ার্স উৎসব যাতে জাতীয় স্বীকৃতি পায়, সে বিষয়ে কর্মকর্তাদের চেষ্টা শুরু করতে হবে।”