উদ্ধার হওয়া সোনার বিস্কুট। নিজস্ব চিত্র।
গাড়ির চালকের উপস্থিত বুদ্ধির জোরে গ্রেফতার দুই সোনা পাচারকারী। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় প্রায় ১ কোটি টাকার সোনার বিস্কুট। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে। শনিবার বেলার দিকে দুই হিন্দিভাষী যুবক ধূপগুড়ি বাস স্ট্যান্ডে নামেন। এর পর তাঁরা শিলিগুড়ি যাওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দা বাপি রায়ের গাড়ি ভাড়া করেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন বাপিই।
পথে দুই যুবকের অস্বাভাবিক আচরণ এবং অসংলগ্ন কথাবার্তা শুনে সন্দেহ হওয়ায় গাড়িতে পেট্রল ভরার অছিলায় বাপি একটি পেট্রল পাম্পে ঢুকে যান। এর পর তিনি পেট্রল পাম্পের শৌচালয়ে গিয়ে পরিচিত পুলিশ আধিকারিক, বর্তমানে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার ওসি ট্রাফিক বাপ্পা সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। স্থির হয় যে, ৩১ নং জাতীয় সড়কের গোশালা মোড় এলাকায় গাড়িটিকে থামাবে পুলিশ।
পরিকল্পনা মোতাবেক গোশালা মোড়ে অপেক্ষায় ছিল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ দেখেই গাড়ি থামিয়ে দেন বাপি। এর পর পুলিশ গিয়ে গাড়ি তল্লাশি করতেই বেরিয়ে আসে একের পর এক মোট ১৪টি সোনার বিস্কুট। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ হাতেনাতে গ্রেফতার করে দুই পাচারকারীকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার। আসেন অরিজিৎ কুন্ডু-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। ডাকা হয় স্বর্ণকারকে। এর পর শুরু হয় কোষ্ঠীপাথরে ঘষে সোনা যাচাইয়ের কাজ।
গাড়িচালক বাপি পরে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ভরদুপুরে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে দু’জন জ্যাকেট পরে বসে থাকায় আমার প্রথম সন্দেহ হয়েছিল। এর পর তাঁরা চা খাওয়ানোর জন্য একটি ধাবায় নামলে লক্ষ করি, এক জন বার বার তার জ্যাকেটটিকে কোমরের দিকে টেনে নামানোর চেষ্টা করছেন।” বাপি জানান, ওই দু’জন তাঁকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে শিলিগুড়ির বদলে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। এর পরই বাপি বুঝতে পারেন, কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা গাড়িতে উঠেছেন। এর পরই গোটা ঘটনা পুলিশকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পুলিশ গোশালা মোড়ে গাড়ি তল্লাশি করা শুরু করলে ১৪টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়। এগুলির মোট ওজন ১ কেজি ৬২৮ গ্রাম। আনুমানিক মূল্য প্রায় কোটি টাকা। সঙ্গে সঙ্গেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জেরায় জানা গিয়েছে, এরা দু’জনেই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। তবে এত পরিমাণ সোনা কোথা থেকে আসছিল আর কার কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তার জন্য আরও বিস্তারিত জেরা করে জানার চেষ্টা করা হবে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ সেন জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই দু’জনই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। তবে এত পরিমাণ সোনা কোথা থেকে আসছিল, কার কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, বিস্তারিত তদন্তের পরই তা জানানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।