পরিবারের পাঁচ সদস্যই ছিলেন দৃষ্টিশক্তিহীন। পথে ভিক্ষা করেই চলত তাঁদের জীবন। সেই অন্ধকার জীবনে আলো ফোটাল ‘চোখের আলো’ প্রকল্প। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু বিভাগে অস্ত্রোপচারের পর দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে বছর পনেরোর সুমিত এবং বছর বারোর সোমা।
মালদহের গাজলের তুলসীডাঙার বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের বিশ্বনাথ সরকার। ছোটবেলায় তাঁর টাইফয়েড হয়। এর পর দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে ফেলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী অর্চনা সরকারর বয়স আটত্রিশ। তিনিও প্রায় দৃষ্টিহীন। তাঁদের দুই ছেলে বছর কুড়ির অমিত আর বছর পনেরোর সুমিত। দুই মেয়ে বছর বারোর সোমা আর চার বছরের সোনালি। অমিত ছাড়া বাকিরা সকলেই দৃষ্টিশক্তিহীন। ভিক্ষা করেই চলত জনা ছয়েকের ওই পরিবার। কিন্তু বছর দু’য়েক আগে শুরু হয় দিনবদলের পালা।
ঘটনার সূত্রপাত বছর দুয়েক আগে। মালদহের গাজলের ব্যবসায়ী প্রদীপ লাহা এই দৃষ্টিহীন পরিবারের পাঁচ সদস্যকে ভিক্ষা করতে দেখেন রাস্তায়। এর পর তিনি গাজল ব্লকের হাতিমারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক অজিতকুমার দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অজিতের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় তাঁদের চিকিৎসা। অজিত ওই পরিবারের সকলের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তদ্বির করতে থাকেন। এই সময় রাজ্য সরকারের ‘চোখের আলো’প্রকল্পের সূচনা হয়। সেই প্রকল্পের আওতায় শুরু হয় তাঁদের চিকিৎসা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু শল্যচিকিৎসক সুমন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৈরি হয় মেডিক্যাল টিম। ঠিক হয় দু’টি পর্যায়ে এই পরিবারের পাঁচ সদস্যের অস্ত্রোপচার করা হবে। প্রথম পর্যায়ে সুমিত এবং সোমার অস্ত্রোপচার হয় গত ২১ নভেম্বর। অস্ত্রোপচারের পর দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়ে খুশি সুমিত এবং সোমা। চোখের আলো ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় খুশি বাকিরাও।