এই ঘরেই চলত নাচের স্কুল। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ তদন্তে জেনেছে মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা মাইনে পেতেন নিখোঁজ সঙ্গীতা কুণ্ডু। কিন্তু, ওই তরুণীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি বলছে, দীর্ঘ দিন ধরে সেখানে লেনদেন সে ভাবে হয়নি। পুলিশের জানতে পেরেছে, অ্যাকাউন্টে বহু দিন ধরে পড়ে রয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা। একটি জিম-পার্লার মালিকের সংস্থার কর্মরতা সঙ্গীতার টাকা তা হলে কোথায় গেল, সেটাই পুলিশকে ভাবাচ্ছে। তরুণীকে খুঁজতে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে শিলিগুড়ি পুলিশ। তদন্ত করে সঙ্গীতার নামে আপাতত একটি মাত্র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। পরিবারের তরফে সঙ্গাতার মা অঞ্জলিদেবীর প্রশ্ন, ‘‘আমার মেয়ে তো মালিক পরিমলের দেওয়া ফ্ল্যাটেই থাকত। তা হলে মাইনের টাকাগুলো গেল কোথায়! পুলিশ খুঁজে বার করুক।’’
বস্তুত, পুলিশও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ, সঙ্গীতা নিজে থেকে কোথাও গা ঢাকা দিয়ে থাকলে প্রায় দুমাসের খরচ চালানোর রসদ দরকার। সে ক্ষেত্রে টাকা কী ভাবে কে জোগাতে পারে, সেটাও পুলিশ খুঁজছে। উপরন্তু, অঞ্জলিদেবীর অভিযোগ অনুযায়ী, পরিমলবাবুই সঙ্গীতার অন্তর্ধানের জন্য দায়ী। সঙ্গীতা সংস্থা থেকে অন্তত ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন বলে পুলিশের একাংশ বাড়ির লোকজনদের জানিয়েছেন। অঞ্জলিদেবীর দাবি, পুলিশ ঠিকঠাক লোককে লাগাতার জেরা করলেই অনেক তথ্য পাবে। কিন্তু, পুলিশ সেটা করছে না বলেই মেয়ের হদিশ মিলছে না বলে অঞ্জলিদেবীর অভিযোগ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে, তাতে খুব বেশি টাকা নেই। যা তথ্য মিলছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, যে দিন সঙ্গীতার খোঁজ মিলছে না, তার বেশ কয়েক দিন আগে থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়নি। এটিএম থেকেও টাকা তোলা হয়নি। বছরখানেক আগে বেশ কয়েকটি চেক জমা পড়েছিল অ্যাকাউন্টে। সেগুলি কে বা কারা দিয়েছেন, কেন দিয়েছেন, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। সেবক রোডের যে ফ্ল্যাটে সঙ্গীতা কুণ্ডু থাকতেন, সেটি গত রবিবার পুলিশ সিল করেছে। সেই ফ্ল্যাট থেকেও খুব বেশি নগদ টাকা পায়নি পুলিশ। বিস্মিত সঙ্গীতার দাদা শম্ভুবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত ঠিক হলে সবই বেরোবে। আমরা হাল ছাড়িনি। দেখা যাক না কী হয়!’’