নয়া কোর কমিটি, ক্ষোভ তৃণমূলেই

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব চরম আকার নিয়েছিল কোচবিহারে। সদ্য ঘোষণা করা কোর কমিটি নিয়ে সেই ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৮ ০১:০৫
Share:

ঘোষণা: নয়া কোর কমিটি ঘোষণার সময় জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব চরম আকার নিয়েছিল কোচবিহারে। সদ্য ঘোষণা করা কোর কমিটি নিয়ে সেই ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, কোচবিহারে জেলা রাজনীতি পরিচালনায় চার জনের কোর কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির চেয়ারম্যান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বাকি তিন জন সদস্যের মধ্যে রয়েছেন উদয়ন গুহ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মন এবং হিতেন বর্মন। এই তিনের মধ্যে দু’জন ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আগে ওই কোর কমিটি ছিল ১৩ জনের। সেই কমিটিতে সমস্ত বিধায়কদের বাইরে সাংসদ, শাখা সংগঠনের সভাপতিরাও ছিলেন। কেন বাকিদের বাদ দেওয়া হল, কেনই বা মিহির গোস্বামীর বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়কের ওই কমিটিতে ঠাঁই হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দলের যুব সংগঠনের সদস্যরাও সাংসদ তথা জেলা যুব সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়কে ওই কমিটিতে রাখা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন। অনেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ওই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন।

মিহিরবাবু বা পার্থবাবু কেউই অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। মিহিরবাবু বলেন, “ওই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।” পার্থবাবু বলেন, “সংবাদমাধ্যমে ওই কমিটির কথা জানতে পেরেছি। এর বাইরে আমি কিছু জানি না। পরে বিশদে খোঁজ নিয়ে যা বলার বলব।”

Advertisement

ওই দুই নেতা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাঁদের অনুগামীরা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, যে বাম নেতাদের বিরুদ্ধেই লড়াই করেই তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল এখন সেই বাম নেতারাই কী করে তৃণমূলের নেতা হয়ে বসেছেন! মিহিরবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত শ্রমিক তৃণমূলের নেতা আলিজার রহমান বলেন, “এই কোর কমিটি গ্রহণযোগ্যতা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে নেই। তাই এটা ভিত্তিহীন। অনেক বর্ষীয়ান নেতা যাঁরা জন্মলগ্ন থেকে দলে রয়েছেন তাঁদের গুরুত্বহীন করে রাখা হয়েছে। এতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমবে না বাড়বে তা রাজ্য নেতৃত্বের বোঝা উচিত।”

অনেক তৃণমূল নেতা তলে তলে বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করছেন বলে গুঞ্জন দলের অন্দরেই। এই ক্ষোভ কাজে লাগাতে কোমর বেঁধে মাঠে নামার ছক তৈরি করেছে বিজেপিও। দলের সদ্য প্রাক্তন সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “তৃণমূল এখন বামে পরিণত হয়েছে। আদি তৃণমূলের লোকজন কেউ আর ওই দলে থাকতে চাইছেন না। অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন তার মধ্যে প্রথমসারির লোকজন রয়েছেন। এক শিক্ষক নেতাও রয়েছেন।” তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিধায়ক অশোক মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের কর্মী –সমর্থকরা এখন হতাশ হয়ে আছেন। তাঁরা কেউ যদি দলে আসতে চান সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জেলা নেতৃত্ব নেবে।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পাল্টা বলেন, “বিজেপির যে দু-একজন ছিল তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। কিছু ভিত্তিহীন কথা বলে বাজারে থাকতে চাইছেন বিজেপি নেতারা। কোর কমিটি দলনেত্রী ঠিক করে দিয়েছেন। সবাই মিলেই একসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement