রাজ্যে শাসক দলের প্রতি ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গে রূপান্তরকামীরা বিরোধী জোটকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিলেন। রূপান্তরকামীদের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার বোর্ড গঠন করলেও তা কোনও কাজ করছে না বলে অভিযোগ। সে কারণে রবিবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে রূপান্তরকামীদের সংগঠন নর্দার্ন ব্ল্যাক রোজ সোসাইটির তরফে জানানো হয়, তাঁরা নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থন করছেন না। নর্দার্ন ব্ল্যাক রোডের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গে তাঁরা ১ লক্ষ ৩৬ হাজার জন রয়েছেন। তাঁরা যে বিজেপিকেও সমর্থন করবেন না। ধর্ম নিরপেক্ষ দলকেই তারা সমর্থন করতে চান। তবে সরাসরি রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের জোটের নাম তাঁরা করেননি।
নর্দার্ন ব্ল্যাক রোজ সোসাইটির চেয়ারপার্সন সৌভিক ঘোষাল বলেন, ‘‘রাজ্যে রূপান্তরকামীদের জন্য বোর্ড গঠন হলেও তার কোনও কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, জেলা থেকে যাঁদের পাঠানো হয়েছে, তাঁরা কী কাজ করবেন, সে সব স্পষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীও বিষয়টি দেখছেন না বা দেখতে চাইছেন না। আমরা তাই শাসক দলের পক্ষে নেই। যারা গণতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষ তাদের সমর্থনের জন্য আমাদের সকলকে অনুরোধ করছি।’’ তাঁরা জানান, প্রতি বারই ভোটের সময় তাঁরা কাকে সমর্থন করতে চান, তা জানিয়ে দেন।
তবে দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকারের কথায়, উত্তরবঙ্গের রূপান্তরকামীদের সকলেই যে ওই সংগঠনের তা নয়। সেই সঙ্গে রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলনেত্রী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উন্নয়নে বোর্ড গড়েছেন। সেখানে যদি কোনও সমস্যা হয়, তা হলে তা নিশ্চয়ই ঠিক করা হবে।’’ সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে রূপান্তরকামীদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলতেও চান বলে জানান রঞ্জনবাবু।
সৌভিক ঘোষালদের দাবি, রূপান্তরকামীদের জন্য যে বোর্ড তৈরি হয়েছে তার মাধ্যমে কর্ম সংস্থান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংরক্ষণের কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু কার্য ক্ষেত্রে কিছুই হচ্ছে না।
সিপিএমের তরফে অশোক ভট্টাচার্য জানান, গণতান্ত্রিক দল হিসাবে যারাই তাঁদের সমর্থন করতে চান, তাঁরা স্বাগত জানাবেন। একই কথা জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফেও। বিজেপি নেতা রথীন বসু বলেন, ‘‘ওঁরা কী বলতে চাইছেন, জানি না। তবে কেন্দ্রে বর্তমান মোদী সরকার রূপাম্তরকামীদের জন্য কিছু করার কথা ভাবছে, চেষ্টা করছে। তাই কেন তাঁরা আমাদের সমর্থন না করার কথা বলছেন, তা নিয়ে ওঁদের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলব।’’
টহল বাড়াতে নির্দেশ। কোচবিহারের সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক দল। রবিবার কোচবিহার সার্কিট হাউসে জেলা পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন দিল্লির সিইও চন্দ্রভূষণ কুমারের নেতৃত্বাধীন পর্যবেক্ষকেরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে জেলার সংবেদনশীল এলাকার পাশাপাশি ভয়-ভীতির আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন এমন ভোটারদের ব্যাপারে বিশদে খোঁজখবর নিয়েছেন। জেলায় সংবেদনশীল এলাকা হিসাবে কোন জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, ভয়-ভীতির আশঙ্কায় রয়েছেন এমন ভোটারের সংখ্যা কত, তালিকায় কারা রয়েছেন এসব ব্যাপারে খুঁটিনাটি তথ্য জানতে চান তাঁরা। ভয় মুক্ত পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সংবেদনশীল বলে চিহ্নিত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। এরই পাশাপাশি ভোটার তালিকা থেকে কত জন কেন বাদ পড়েছেন, তা নিয়েও বিভিন্ন তথ্য জানতে চান পর্যবেক্ষকরা।