ফাইল চিত্র।
জেলাশাসক বদলি হলেন কিছু দিন আগে। তার পরেই বদলি হয়ে গেলেন জলপাইগুড়ির দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক-সহ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের এক ঝাঁক আধিকারিক। বদলি হলেন জেলার পাঁচটি ব্লকের বিডিওরা। গত লোকসভা ভোটের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কোনও আধিকারিককেই আর জেলায় রাখা হল না বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। মাস ছয়েকের মধ্যেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। রাজ্যপাল নিয়মিত অভিযোগ করছেন, প্রশাসনের আধিকারিকরা নিরপেক্ষ নন। কী ভাবে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রেখে ভোট করাতে হয়, তা-ও জানা আছে বলে রাজ্যপাল জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের খোল-নলচে বদলে যাওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে দাবি করছেন আমলাদের একাংশই।
লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়িতে বিজেপি বিপুল জয় পেয়েছিল। ভোটের পরেই বদলি করা হয় জলপাইগুড়ির তৎকালীন জেলাশাসককে। তখন জেলাশাসক হয়ে আসা অভিষেক তিওয়ারিকে সম্প্রতি বদলি করা হল। মোটে চোদ্দো মাসের হয়েছিল তাঁর এই পদে। জলপাইগুড়ির নতুন জেলাশাসক হিসেবে বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নিয়েছেন মৌমিতা গোদারা বসু। সে দিনই নবান্ন থেকে রাজ্য জুড়ে আধিকারিকদের বদলির নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ), অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) দু’টি পদেই বদলি হয়েছে। জলপাইগুড়ির সদর মহকুমাশাসককে বদলি করা হয়েছে। জেলার পরিকল্পনা আধিকারিক, জেলা গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক, অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের প্রকল্প আধিকারিক, তফসিলি জাতি, উপজাতি উন্নয়ন এবং অর্থ কমিশনের আধিকারিক, জেলা পরিষদের উপ-সচিব পদে থাকা আধিকারিকদের বদলি করা হয়েছে।
আগামী বিধানসভা ভোটের দিকেই চোখ রেখে এই বদলি কিনা, তা নিয়ে জেলা প্রশাসনেও প্রশ্ন উঠেছে। প্রতি ভোটের আগেই দু’বছরের বেশি সময় ধরে একই জেলায় থাকা আধিকারিকদের বদলি করে নির্বাচন কমিশন। এ বারে রাজ্যই ভোটের ছ’মাস আগে সেই বদলি পর্ব সেরে নিল। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এর নেপথ্যে নবান্ন তথা শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বের কৌশল। ভোটের আগে সদ্য বদলি হয়ে আসা আধিকারিকরা অনেক সময়ে জেলার চরিত্র ভাল করে বুঝতেই পারেন না বলে অতীত অভিজ্ঞতায় জেনেছেন আমলারা। এ বারে বিধানসভা ভোটের আগে তেমনটা যাতে না হয়, সে কারণে আগে ভাগে নতুন আমলাদের জেলায় নিয়ে আসা হল বলে মনে করা হচ্ছে। এতে জেলার চরিত্র বুঝে যাওয়া আমলাদের হাতেই ভোট পরিচালনার লাগাম থাকবে।
যদিও আধিকারিকদের একাংশের দাবি, এত নিশ্চিত করে সবটা বলা যায় না। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন মনে করলে ফের খোলনলচে বদলাতে পারে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “জেলার আমলারাই সেই জেলা প্রশাসনের মুখ। জলপাইগুড়ি জেলায় কাজে গতি বাড়াতে প্রশাসনের মুখও বদলানো হল।”