লাইনচ্যুত। — বিশ্বরূপ বসাক
ট্রেনের মাথাটা সবে প্ল্যাটফর্ম ছেড়েছে। গতিও সামান্য। হঠাৎই ঝাঁকুনি দিয়েথেমে গেল ট্রেন। সঙ্গে বিকট শব্দ। ইঞ্জিনের সামনের দু’টি চাকা লাইন থেকে পড়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেল এনজেপি-চেন্নাই সেন্ট্রাল এক্সপ্রেস।
শুক্রবার রাত দশটা নাগাদ শিলিগুড়ি শহরের ব্যস্ত এলাকা মহাবীরস্থান উড়ালপুলের নীচে লাইনচ্যুত হয়ে ঘণ্টাদুয়েক দাঁড়িয়ে থাকে দুরপাল্লার ট্রেনটি। ট্রেনের গতি কম থাকায় ইঞ্জিনের সামনের দু’টি চাকা লাইন থেকে পড়ে যেতেই ব্রেক কষে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। ট্রেনের গতি বেশি থাকলে ইঞ্জিনের পরেরও বেশ কয়েকটি কামরার চাকা লাইনচ্যুত হয়ে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। তবে ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। দুর্ঘটনার পরে লাইনচ্যুত ইঞ্জিনটিকে রেখে ট্রেনটিকে পেছন দিকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন নিয়ে যাওয়া হয়। ঘুরপথে ট্রেনটিকে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের এনজেপির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথী শীল বলেন, ‘‘কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা দেখা হচ্ছে। তবে প্রথমেই যাত্রীদের সুরক্ষা এবং নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনগামী সাপ্তাহিক ট্রেনটি প্রতি শুক্রবার এনজেপি স্টেশন থেকে ছাড়ে। রাত ৯টা ২৫ মিনিটে এনজেপি ছেড়ে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনে পৌঁছয় ট্রেনটি। রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, লাইনের ভারসাম্যে কোনও ক্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে থাকবে। রেলের দাবি, গভীর রাতে এই লাইনে দুরপাল্লার ট্রেনের সংখ্যা বেশি না থাকায় কোনও সমস্যা হবে না। ট্রেনগুলিকে ঘুরপথে চালানো হবে।
ট্রেন থেমে যাওয়ায় মহাবীরস্থান রেলগেটও বন্ধ থাকে। তার জেরে যানজটও শুরু হয় মহাবীরস্থান, এসএফ রোডের কিছু অংশে। ট্রেনের কয়েকটি কামরা প্ল্যাটফর্মে থাকলেও বাকিগুলি অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছিল। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আরপিএফ এবং রেল পুলিশের বাহিনী দিয়ে কামরাগুলি পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। ট্রেনের যাত্রী রাজকুমার দাস বলেন, ‘‘এত জোরে ঝাকুনি হয়েছিল যে মনে হল যেন কামরাটাই পড়ে যাবে।’’ শিলিগুড়ি জংশনের চিফ কর্মাশিয়াল ইন্সপেক্টর রাজদ্বীপ বসু বলেন, ‘‘যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য মেডিক্যাল ভ্যান আনা হয়েছিল। তবে তার কোনও প্রয়োজন পড়েনি।’’
সাড়ে এগারোটা নাগাদ ট্রেনটিকে ঘুর পথে এনজেপি রওনা করানো হয়।