পর্যটন দিবসে ভোগান্তি পাহাড়ে

ছুটি কমিয়ে নেমে গেলেন অনেকে

মঙ্গলবার বিশ্ব পর্যটন দিবসের দিনই পাহাড়ে নাজেহাল হলেন পর্যটকরা। আজ, বুধবার মোর্চার ডাকা বনধের জন্য অনেককেই সূচি কাঁটছাট করে সমতলে নেমে আসতে হল। কেউ কেউ আবার গন্তব্য পাল্টে চলে গেলেন সিকিম, ডুয়ার্সেও। প্রশ্ন উঠছে, পাহাড়ে এবারের পযর্টন মরশুম বিগত বছরগুলির অভিজ্ঞতাকে ফিরিয়ে আনবে না তো?

Advertisement

রেজা প্রধান

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৫৪
Share:

কালিম্পঙে তৃণমূলের মিছিলে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। — নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার বিশ্ব পর্যটন দিবসের দিনই পাহাড়ে নাজেহাল হলেন পর্যটকরা। আজ, বুধবার মোর্চার ডাকা বনধের জন্য অনেককেই সূচি কাঁটছাট করে সমতলে নেমে আসতে হল। কেউ কেউ আবার গন্তব্য পাল্টে চলে গেলেন সিকিম, ডুয়ার্সেও। প্রশ্ন উঠছে, পাহাড়ে এবারের পযর্টন মরশুম বিগত বছরগুলির অভিজ্ঞতাকে ফিরিয়ে আনবে না তো? জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি সমস্ত রকমের সাহায্যের আশ্বাসেও পুরোপুরি শঙ্কা কাটছে না।

Advertisement

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পর্যটকদের অনেককেই দার্জিলিং থেকে মঙ্গলবার সিকিমের নানা গন্তব্যে পাঠানো হয়েছে। তেমনিই, অনেকের সূচি এক দিন এগিয়ে এনে মঙ্গলবারই দার্জিলিঙের স্থানীয় দ্রষ্টব্যগুলি দেখানো হয়েছে। আবার বুধবার যাঁদের ট্রেন ও বিমান ধরার রয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগকেই এ দিন শিলিগুড়ি বা ডুয়ার্সের বিভিন্ন গন্তব্যে এনে রাখা হয়েছে। আবার কোনও কোনও কোনও দলকে বুধবার ভোররাতে পাহাড় থেকে রওনা করিয়ে আলো ফোটার আগেই বিমানবন্দর বা স্টেশনে নিয়ে আসার ব্যবস্থা হচ্ছে। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারের্টস অ্যাসোসিয়েশনের (এতোয়া) কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘বন্‌ধের জেরে পর্যটকদের দুর্ভোগ হচ্ছে। সফর সূচি পাল্টাতেই সবাইকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অন্য গন্তব্যে পাঠানো, ট্রেন বা বিমান থাকলে সমতলে নামিয়ে আনা সবই করতে হচ্ছে।’’

হোটেল, গাড়ি, পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর মহালয়ার সময় থেকে পাহাড়ে শীতের পর্যটন মরশুম শুরু হয়। এরমধ্যে সমতলে জঙ্গলও খুলে যাওয়ায় ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে থাকে। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর সময় পর্যন্ত মরশুম জোর কদমে চলে। কিন্তু মোর্চার ডাকা হঠাৎ বনধের জেরে সবাইকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকে নানা চিন্তাভাবনাও করছে। বর্তমানে পাহাড়ের বেশিরভাগ হোটেলেই ৪০-৪৫ শতাংশ বুকিং রয়েছে।

Advertisement

পাহাড়ের মোর্চার ডাকা বন্‌ধকে ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কার ভয় পাচ্ছেন পর্যটকরা। বন্‌ধের চিরাচরিত সংস্কৃতি ফের মরশুমের আগেই শুরু হয়ে গেলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে বলে মনে করছেন পাহাড়ের হোটেল ব্যবসায়ীরা। ম্যাল রোড লাগোয়া এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমাদের হোটেলে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত পুরো বুকিং রয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত পর্যটকরা অনেকেই খোঁজখবর নিচ্ছেন। আজ, বুধবার একটি দলের শিলিগুড়ি যাওয়ার কথা ছিল, দলটি এ দিনই সমতলে নেমে গিয়েছে। কেউ কোনও সমস্যায় পড়তে চাইছে না।’’

কলকাতা থেকে মা’কে নিয়ে পাহাড়ে ঘুরতে এসেছিলেন সৈকত গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘একদিন আগেই সফর সূচি বদল করে সমতলে নেমে যাচ্ছি। আমরা বন্‌ধে আটতে থাকতে চাই না।’’ তেমনিই, কলকাতার আরেক বাসিন্দা তন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘’২৯ সেপ্টেম্বর সকালে পাহাড় ছাড়ার কথা ছিল। মিরিকেও যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতির কথা শুনে সফর শেষ করে চলে যাচ্ছি।’’

আবার অনেকে, বন্‌ধের দিন হোটেলে কাটিয়ে পরের কয়েকদিন পাহাড়কে উপভোগ করে যাওয়ার পরিকল্পনাও তৈরি করেছেন।

হুগলির বাসিন্দা শান্তনু হালদার বলেন, ‘‘বনধের কথা শুনেছি। একদিন হোটেলে বসে থাকব। টয়ট্রেন খোলা থাকলে চড়ব। পাহাড়ে তো আর বারবার আসা হয় না।’’ দ্য দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ লামা বলেন ‘‘১২ ঘন্টার বন্‌ধে সাধারণত বুকিং বাতিলের ঘটনা ঘটে না। তবে বন্‌ধে কী হবে, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। খারাপ কিছু হলে বুকিং বাতিল হতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement