উন্নয়নে পর্যটন এবং শিল্পায়নই এখন পাখির চোখ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের।
বৃহস্পতিবার উত্তরকন্যায় দফতরে বসে সে কথা জানিয়ে দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, পর্যটন এবং শিল্পায়নকে ভর করেই এখানকার আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। এই লক্ষ্য সামনে রেখেই তিনি কাজে নামছেন। এ দিন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক করেছেন তিনি।
আগামী ৭-৮ জুন সাত জেলা জেলাশাসক, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন এবং পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মানুষদের নিয়ে তিনি বৈঠক করবেন। প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এখন পর্যটন মন্ত্রী। পাঁচ বছর উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাঁর সঙ্গেও তিনি বিষয়গুলি আলোচনা করবেন ও সহযোগিতা নেবেন বলে জানান।
নতুন মন্ত্রী জানিয়ে দেন, বন পাহাড় ঘেরা উত্তরবঙ্গে পর্যটনের সমস্ত উপাদান রয়েছে। তা সত্ত্বেও পাঁচ, ছয় বছর আগেও পর্যটনের সম্ভাবনা কমে গিয়েছিল ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট, বিভিন্ন বাংলোগুলির বেহাল পরিস্থিতির জন্য। পাহাড়ে রাজনীতি নিয়ে পরিস্থিতি অস্থির হয়ে পড়েছিল। এখন রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে। পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। পর্যটকেরা দার্জিলিং ঘোরার টানে মূলত এখানে আসেন। সঙ্গে ডুয়াসের্র বিভিন্ন জায়গা ঘোরেন। বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘পর্যটনের উন্নয়নের সঙ্গে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি যে ধরনেরই শিল্প গড়তে উদ্যোগীরা আসুন আমরা স্বাগত জানাব। যারা বিনিয়োগ করবেন তাদের সমস্ত সাহায্য করা হবে।’’
এর আগেও শিল্পায়ণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। ‘নর্থ বেঙ্গল কলিং’-এর আয়োজন করে শিল্পপতিদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁরা অনেকেই উৎসাহ হারিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে বারবার কথা বলা হবে। দেশ বিদেশের পর্যটকদের আনতে পরিকল্পনা নেওয়া হবে।’’ বিষয়টি নিয়ে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) এবং অন্যান্য শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গেও তিনি আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই কোচবিহারে শীতলপাটি তৈরির শিল্পের উন্নয়নে তিনি সচেষ্ট হয়েছেন। ওই শিল্পকে আরও উন্নত করা হবে।
এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা জানান, দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে তাঁর বিধানসভা ক্ষেত্র পিছিয়ে পড়া এলাকা। এখনও বহু রাস্তা কাঁচা রয়েছে। এ ধরনের অন্তত ১০০ টি রাস্তা পাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে সমস্যা রয়েছে পানীয় জলের।
সে কারণে তপন এবং গঙ্গারামপুরে তিনি দুটি বড় জল সরবরাহের প্রকল্পের কথা ভেবেছেন। পরিকল্পনা রয়েছে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় ‘আদিবাসী উৎকর্ষ’ কেন্দ্র গড়ে তোলার। সংখ্যালঘুদের জন্যও এ ধরনের কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। রবীন্দ্রনাথবাবুর পরামর্শ নিয়ে ওই সমস্ত কাজ করতে চান বাচ্চুবাবু।
বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুরকেও পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরতে চান। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, শিল্পায়ন এবং পর্যটন ছাড়া নদী বাধা তৈরি এবং মেরামতি, পানীয় জলের সমস্যা সমাধারেনর উপর জোর দেওয়া হবে।