কালিয়াগঞ্জ কলেজে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র
দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বামফ্রন্ট চাষিদের ভুল বুঝিয়ে বাইপাসের কাজে বাধা দিচ্ছে। ইসলামপুরে এসে এমন অভিযোগই করলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।
বাইপাস তৈরির কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে সোমবার বিকেলে রায়গঞ্জের সার্কিট হাউসে প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি, পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পরে তিনি অভিযোগ তোলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তর দিনাজপুরে ইসলামপুরের বাইপাসকে আঁকড়ে ধরে বামফ্রন্ট অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। দলের নেতা, সাংসদ ও বিধায়কেরা চাষিদের ভুল বুঝিয়ে বাইপাস তৈরির কাজ আটকাতে উন্নয়ন বিরোধী রাজনীতি শুরু করেছেন। রাজ্য সরকার চাষিদের পাশে রয়েছে।’’ তিনি জানান, বাইপাস তৈরির কাজ চালু রাখতে পুলিশ ও প্রশাসনকে উপযুক্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত কয়েকমাস ধরে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে চাষিদের একাংশের আন্দোলনের জেরে ইসলামপুরে দফায় দফায় বাইপাস তৈরির কাজ আটকে গিয়েছে। রায়গঞ্জের সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম, চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজ-সহ জেলা বামফ্রন্টের একাধিক নেতাদের চাষিদের পাশে দাঁড়িয়ে ওই আন্দোলনের নেতৃত্বও দিতে দেখা গিয়েছে। ওই আন্দোলন প্রসঙ্গে গৌতমবাবুর বক্তব্য, ‘‘বামফ্রন্ট চাষিদের ভুল বোঝাচ্ছে। রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জমিদাতা চাষিদের পরিবারের সদস্যদের সিভিক পুলিশ ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চাকরি দিতে শুরু করেছে। প্রতিটি পরিবারকে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘর দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে জমির দাম বাবদ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণের দাবির বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। সেখানে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’ জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালের বক্তব্য, ‘‘২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কেন বাইপাস তৈরির কাজ শেষ হল না, তা গৌতমবাবুদের জবাব দিতে হবে। চাষিদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে বামফ্রন্টের আন্দোলন চলবে।’’
এ দিন দুপুরে কালিয়াগঞ্জ কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ অনুষ্ঠানের সূচনা করেন গৌতমবাবু। ওই অনুষ্ঠানে তিনি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখা, শিক্ষকদের সঙ্গে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সম্পর্ক বাড়ানো ও কলেজের শিক্ষার মানকে আরও উন্নত করার কথা বলেন। রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাসকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে আগামী জানুয়ারি মাসে চার কোটি টাকা বরাদ্দে পক্ষনিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হবে বলেও এ দিন দাবি করেছেন পর্যটনমন্ত্রী।