শিলিগুড়ি মহকুমার প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে, পঞ্চায়েত সমিতিতে সরকারি কাজের দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ পেলে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সেই সঙ্গে কোনও ধরনের সরকারি কাজ ই-টেন্ডার ছাড়া যাতে না হয়, তা-ও জেলাশাসককে দেখতে বলা হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, ২৬ জুন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব দার্জিলিঙের জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়াকে চিঠি দিয়ে মন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানান। তার পরে ১৯ জুলাই মহকুমা পরিষদের তরফে সরকারিভাবে চিঠি দিয়ে ওই নির্দেশের কথা প্রতিটি ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে কাটমানি থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে উপভোক্তাদের কাছ থেকে যখন একের পর এক কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠছে, সেই সময় মন্ত্রীর এই নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এখন যে কোনও সরকারি প্রকল্পের কাজ ৫ লক্ষ টাকা অবধি সাধারণ বা ‘ম্যানুয়াল’ টেন্ডারের মাধ্যমে হয়। মন্ত্রী তা বন্ধ করে সমস্ত কাজ ই-টেন্ডারে করতে বলেছেন।
মন্ত্রীর চিঠিতে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি সরকারি প্রকল্পের কাজের মান বজায় রাখতে প্রতিনিয়ত নজরদারি করতে হবে। সরকারি টাকা যাতে কোনও মধ্যস্বত্বভোগীর হাতে না গিয়ে সরাসরি উপভোক্তার হাতে পৌঁছয়, তা সুনিশ্চিত করার কথাও রয়েছে। তোলবাজির অভিযোগ থাকলে তা কড়া হাতে দমনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তবেই যেন ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয় এবং মহকুমায় চলা সমস্ত সরকারি প্রকল্পের দ্রুত তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হয়, তারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠির শেষে বলা হয়েছে, কোথাও দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তা সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে জেলাশাসককে।
মহকুমা পরিষদের অফিসারেরা জানান, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে নানা সময়ে দুর্নীতি অনিয়ম, স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। ১০০ দিনের কাজ থেকে আবাসন প্রকল্প— সব ক্ষেত্রেই কাটমানি নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আবার ই-টেন্ডার না করে পরিচিত ঠিকাদারদের সঙ্গে মিলে টাকা নয়ছয় করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে বহুবার। লোকসভায় ভোটে হারের পর মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলীয় কয়েক জন নেতা-কর্মীর নামে নানা অভিযোগ মন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর পরেই তিনি ওই নির্দেশ দিয়েছেন বলে সরকারি অফিসারেরাই মনে করছেন। তবে প্রকাশ্যে এই নিয়ে মন্ত্রী নিজে কিছু বলতে চাননি।