জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ লকডাউনের পর স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে ডুয়ার্স। তাই শীতের মরসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় সেখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
লকডাউনের কারণে টানা প্রায় ৬ মাস বন্ধ ছিল ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি, গরুমারা, চাপড়ামারি, মূর্তি-সহ আলিপুরদুয়ারের বক্সা, জয়ন্তী এবং চিলাপাতার মতো এলাকার সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি রিসর্ট। যার ফলে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবশেষে বেসরকারি রিসর্টগুলি খোলার অনুমতি মিলেছে। তবে অধিকাংশ সরকারি রিসর্ট এখনও বন্ধ। এ দিকে শীত পড়তেই বাড়তে শুরু করেছে পর্যটকদের সংখ্যা। এতেই ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
রিসর্ট মালিকরা কিছু স্বাস্থ্যবিধি বেঁধে দিয়েছেন পর্যটকদের জন্য। এমনকি প্রশাসন এবং বন দফতরের তরফেও বেশ কিছু নিয়ম করা হয়েছে। যেমন আগে জিপ সাফারিতে ৭ জন করে যেতে পারতেন। বর্তমানে তা হয়েছে ৪ জন। এমনকি নজর মিনারগুলিতে ওঠার ক্ষেত্রেও সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে । নজরমিনারে ৪ জনের বেশি উঠতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন লাটাগুড়ি রিসর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব।
দিব্যেন্দু বলেছেন, “এত দিন পর্যটক আসা বন্ধ ছিল। তবে অক্টোবরের শেষের দিক থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। এখনও ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যটক আসছেন ডুয়ার্সে। তাই আমরাও আশায় আছি হয়তো করোনার ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারব। পর্যটকরা আসা শুরু করায় আগের মতো বিনোদনের জন্য রাতে আদিবাসী নাচের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এ সবই হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে।”
দীর্ঘ লকডাউনের কারণে পরিবেশ তার ভারসাম্য ফিরে পেয়েছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে বন্যপ্রাণীরা। দীর্ঘ ৬-৭ মাস পর্যটক না আসায় বন্যপ্রাণীরা স্বচ্ছন্দে ঘুরে বেরিয়েছে। তাই এখন পর্যটকরা ঘুরতে এসে বন্যপ্রাণীদের দলবদ্ধ ভাবে চোখের সামনে ঘুরে বেড়াতে দেখতে পাচ্ছেন। ডুয়ার্সের জলদাপাড়ায় ঘুরতে আসা পর্যটক পেশায় শিক্ষক প্রসেনজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বপ্নেও ভাবিনি একসঙ্গে ৭-৮টি গণ্ডার দেখতে পাব। এর আগেও ঘুরতে এসেছিলাম। কিন্তু গণ্ডার দেখতে না পাওয়ার আক্ষেপ থেকে গিয়েছিল।” এ সবের টানেই পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।