প্রতীকী ছবি
‘‘রাস্তায় না বেরিয়ে কী করব? আমি একা তো নই, বাড়িতে আরও চারটে পেট রয়েছে। তাও এক বেলা টোটো চালিয়ে ৭০-৮০ টাকা রোজগার হচ্ছে। না-খেয়ে মরার চেয়ে করোনায় মরা ভাল।’’ রবিবার সকালে আনলক পর্বে বালুরঘাটের সাধনা মোড়ের তুমুল ভিড়ে আটকে পড়া ডাকবাংলো পাড়ার টোটো চালক গৌতম ভৌমিক এই জবাব দেন।
এ দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আনলকের দৌলতে রাস্তাঘাট, বাজারে হামলে পড়া ভিড় দেখে হাফ-বেলা দু’পয়সা রোজগারের আশায় গৌতমের মতো অন্য টোটো চালকেরাও রাস্তায় নেমে পড়েন। কিন্তু শনিবার—পূর্ণ লকডাউনের একটি মাত্র দিনের মধ্যে মানুষের আনাজপাতির ভাঁড়ার বেবাক শূন্য হয়ে গেল? হেঁশেল চলার মতো রসদ কি কারওরই পড়ে নেই? রবিবার বাজারে এসে শহরবাসীর একাংশকে আনলকের সুযোগ আষ্টেপৃষ্ঠে উসুল করতে দেখে বাকিদের মন্তব্য, করোনাতে মৃত্যু হচ্ছে। সংক্রমণ থামার নাম নেই। তার পরেও বাজার করার হুজুগ কমছে না।
বাজারের ওই ভিড়ভাট্টা থেকে শহরের অনেক বাসিন্দা যে সংক্রমিত হচ্ছেন তা স্পষ্ট জানিয়েছেন জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে। তিনি বলেন, ‘‘নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বাজারে আসতেই হবে। কিন্তু সুরক্ষাবিধিও তো মানতে হবে।’’ তা যে অনেকেই মানছেন না, তা রবিবারের তহবাজারের আনাজ ও মাছের বাজারের ভিড় দেখেই স্পষ্ট। সংকীর্ণ ওই বাজারে গায়ে গায়ে ক্রেতার ভিড় দেখা গিয়েছে বেলা ১১টা পর্যন্ত। অনেকের মুখে আবার মাস্কের বালাই নেই। কারও মাস্ক ঝুলছে থুতনিতে। অথচ ১০ দিন আগে তহবাজারেরই এক দোকানি করোনায় আক্রন্ত হলে তিন দিন বাজার বন্ধ রাখা হয়েছিল। তার পরেও গত তিন দিনে তহবাজার ও সংলগ্ন এলাকায় ৩ জন বাসিন্দা সংক্রমিত হয়ে সেফ হাউজ়ে ভর্তি আছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।
তবে বিধি রক্ষায় এ দিনও বাজারে পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়েনি। ডিএসপি ধীমান মিত্র অবশ্য জানান, দুপুর ১২টায় লকডাউন শুরু হতেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।