সারি: রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ট্রাক। নিজস্ব চিত্র
দিনরাত পাথর বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে ভারত-বাংলাদেশের ফুলবাড়ি সীমান্ত সড়কে। শুল্ক দফতরের থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পরে সীমান্তের গেট টপকে পাথরের ট্রাকগুলো রওনা হয় বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলায়। অভিযোগ, অধিকাংশ ট্রাক রাস্তার এক ধারে সারি দিয়ে থাকলেও কিছু চালক নিয়ম মানেন না। একের বেশি লাইন হয়ে গেলে নজরদারিতে সমস্যা হয় বলে দাবি বিএসএফ-পুলিশের। দিন তিনেক আগে দু’টি পাথর বোঝাই ট্রাকের ফাঁক দিয়ে গলে বেআইনিভাবে মোটরবাইক নিয়ে সীমান্ত টপকে বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া পৌঁছে গিয়েছিলেন তিন ভারতীয় যুবক। এরপরেই সীমান্তে এই সমস্যা রুখতে এশিয়ান হাইওয়েতে বালি-পাথরের ট্রাকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করল শিলিগুড়ি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার থেকে টানা অভিযানে সীমান্ত সড়কে ৮টি পাথর বোঝাই ট্রাককে আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ট্রাক চালকদের। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশ না মেনে রাস্তা, সেতু বা ক্যানালে চলাচলের অভিযোগ আনা হয়েছে। অনেকক্ষেত্রে ট্রাকচালকদের সতর্ক করা হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে অভিযানে জেলা প্রশাসন, পরিবহণ দফতরের অফিসারেরাও ছিলেন। এর আগে সীমান্ত সড়কের ধারে বিভিন্ন বেসরকারি এবং সরকারি জমিতে পাথরের ট্রাক পার্কিং করার বিরুদ্ধে অভিযান চলেছিল। অভিযোগ ওঠে, নিয়ম না মেনে যত্রতত্র পার্কিং লট তৈরি করে টাকা তোলা হচ্ছে। নবান্নের রড়া নির্দেশে তা বন্ধ হয়েছে। তারপরেও রাস্তায় যত্রতত্র ট্রাক রাখা চলছে বলে অভিযোগ।
শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘বালি-পাথরের ট্রাকের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশ মেনে অভিযান চলছে। আর সীমান্ত সড়ক সব সময় পরিষ্কার, যানজটমুক্ত রাখার কখা বলা হয়েছে। কোনও রকমের বেআইনি বালি-পাথর পরিবহণ তো বটেই রাস্তা দখল করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা চলবে না।’’ পুলিশ-প্রশাসন চাইছে, রাস্তার ধারে একপাশে সব ট্রাক থাকলে কোনও সমস্যা নেই। কিন্ত বিক্ষিপ্তভাবে ট্রাক থাকলে অনেক সময় সীমান্ত গেট দেখা যায় না। তাতেই সমস্যা হয় নজরদারিতে।
প্রতিদিন সকাল থেকে সূর্যাস্তের আগে অবধি কয়েকশ ট্রাক পাথর নিয়ে বাংলাদেশে যায়। তেমনিই, বাংলাদেশের দিক থেকে বিভিন্ন ধরণের খাদ্য সামগ্রী, জামাকাপড়ের ট্রাক ভারতে আসে। বাংলাদেশের গাড়িগুলো ভারতে এসে নথিপত্র দেখিয়েই শিলিগুড়ির দিকে রওনা হয়। আর ভারতের দিকে ট্রাকগুলো প্রতিদিন সীমান্ত পার হওয়ার জন্য লাইন দেয়। দফায় দফায় নথিপত্র পরীক্ষার পরে বেশকিছু ট্রাক বাংলাদেশে গেলেও প্রতিদিন বহু ট্রাক থেকে যায়। সেগুলো রাস্তার ধারে, এদিক-ওদিক রেখে দেওয়া হয়। চালক, খালাসিরা সেখানেই রান্না করে খাবার খান।
কমিশনারেটের অফিসারেরা জানিয়েছেন, বেআইনিভাবে সীমান্ত টপকানোর ঘটনার পরে বিএসএফের তরফেও রাস্তা পরিষ্কার রাখার কখা বলা হয়েছে। বিশেষ করে, ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে সীমান্ত গেট অবধি রাস্তা পুরো সাফ রাখার কথা বলা হয়েছে।