সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের পরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কলেজে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে নামল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। বৃহস্পতিবার প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী গোষ্ঠীর অনুগামী টিএমসিপির ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন তুলে নিয়ে মূল ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে মিলে গেল। তাতে বিরোধী বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ৪৮টি আসনে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে নামবে।
বিপ্লববাবুর অনুগামী বলে পরিচিত টিএমসিপির জেলা সভাপতি গঙ্গারামপুরের অতনু রায় বনাম শঙ্করবাবু অনুগামী বালুরঘাটের টিএমসিপি নেতা জয়দীপ চক্রবর্তী—দু’পক্ষই গত সোমবার বালুরঘাট কলেজের সবগুলি আসনে তাঁদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র তুলে নেয়। পরে দু’পক্ষের মধ্যে আসন সমঝোতা করে অতনুরা ৩৪টিতে এবং জয়দীপেরা ১৪টি আসনে প্রার্থী দিয়ে জোট করে লড়বেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। দল সূত্রের খবর, বালুরঘাট কলেজে এবিভিপি ৪৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তার উপর একাধিক আসনে রয়েছে ডিএসও-র প্রার্থী।
তৃণমূল জেলা সভাপতি শঙ্করবাবু থেকে প্রাক্তন সভাপতি বিপ্লববাবু দাবি করেছেন, জেলায় কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু এ জেলায় দলের জেলা নেতৃত্বের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অনেকবার প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে বালুরঘাট কলেজ থেকে যে বার্তা এল, তাতে ছোটরা পারলে, বড়োরা কেন পারবে না—এই কথাও উঠে গেল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বালুরঘাট কলেজে ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগ দু’দিন আগের বৈঠকে নিয়েছিলেন শঙ্করবাবু এবং প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদারা। সাংসদ অর্পিতা ঘোষও ঐক্যের নির্দেশ দেন। এ দিন টিএমসিপির ওই ১৪ জন ছাত্রের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে মূল স্রোতে মিশে যাওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে শঙ্করবাবুর অনুগামী বালুরঘাটের টাউন তৃণমূল সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, ‘‘সকলে মিলে আলোচনার মধ্যে দিয়ে এক হয়ে কলেজ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বালুরঘাটে একটু সমস্যা ছিল। মিটে গিয়েছে।’’ সাংসদ সুদীপবাবু গ্রেফতারের প্রেক্ষিতে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে মোদী বিরোধী আন্দোলনে নেমে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব চান না, কলেজ ভোটে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে বিজেপির ছাত্র সংগঠন মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক। তাই পঞ্চায়েতের আগে কলেজ ভোটে ঐক্যের হাতেখড়িটা দলে বিশেষ প্রয়োজন ছিল বলে মেনে নিচ্ছেন দলের অনেকে।