ভোটে না লড়লে পাহাড়ে সংগঠন কী করবে? চিন্তায় তৃণমূল

তাই বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়ে, পরামর্শ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হিল টিএমসি-র।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভোটে লড়া অথবা আন্দোলন করার অনুমতি না মিললে সংগঠন গড়ে লাভটা কি? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না দার্জিলিং পাহাড়ের তৃণমূল নেতারা। বৃহস্পতিবার কালিম্পঙে ও শুক্রবার মিরিকে দু’-দফায় পাহাড়ে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে জেলা কমিটি গড়ার বৈঠকে ওই প্রশ্ন ওঠে। তার কোনও সদুত্তর মঞ্চে উপবিষ্ট নেতানেত্রীরা কেউ দিতে পারেননি বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়ে, পরামর্শ চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হিল টিএমসি-র।

Advertisement

তৃণমূলের পাহাড়ের নেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘প্রদেশ নেতৃত্বের নির্দেশে দু’দিন ধরে বৈঠক হয়েছে। জেলা কমিটিতে কারা থাকতে পারেন, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সেখানে নানা বিষয়ে মতামত দিয়েছেন প্রতিনিধিরা। যা আলোচনা হয়েছে তা, রিপোর্ট আকারে প্রদেশে জমা দেওয়া হবে। প্রস্তাবিত তালিকা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।’’

পাহাড়ে তৃণমূলের অন্দরের খবর, অতীতে জিটিএ ভোটে প্রার্থী দিয়েও পরে ‘বসে যেতে’ হয় পাহাড়ে দলের নেতানেত্রীদের। তার পরে ফের সংগঠন জোরদার করার নির্দেশ পেলে রাজেন মুখিয়া, বিন্নি শর্মা, প্রদীপ প্রধান, নরবাহাদুর খাওয়াশ, লালবাহাদুর রাইরা পুরভোটের লড়াইয়ে নামেন। সে সময়ে মিরিক পুরসভা তৃণমূলের দখলে যায়। তার কিছুদিন পরেই বিমল গুরুংদের লাগাতার বন্‌ধের ডাকে পাহাড় ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পাহাড় শান্ত হতে ছ’মাস গড়িয়ে যায়। ইতিমধ্যে বিনয় তামাং, অনীত থাপারা রাজ্যের মনোনীত হয়ে জিটিএ-এর তত্ত্বাবধায়ক চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন। বিমল গুরুং, রোশন গিরি ‘ফেরার’ হতেই মোর্চার কর্তৃত্বও বিনয়-অনীত জুটির হাতে গিয়েছে। এর পরেই বিনয়-অনীত শিবিরের অনেকেই পাহাড়ে তৃণমূল যাতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড না করে, তা নিশ্চিত করতে আসরে নামেন। সে সময়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে গিয়ে জানান, তাঁদের দল পাহাড়ে ভোটের রাজনীতি করতে চায় না। সেই প্রসঙ্গ টেনে পাহাড়ের এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা জানান, আলাদা দল হিসেবে যদি কর্মসূচি না নেওয়া যায়, তা হলে সংগঠন বাড়িয়ে লাভ নেই। সে জন্য তাঁরা অনেকেই বসে গিয়েছেন বলে একান্তে জানান।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, দু’দিনের বৈঠকে দেখা যায়নি বিন্নি, রাজেন, প্রদীপ, নরবাহাদুরদের। তবে ‘বসে যাওয়া’র কারণ জানতে ফোন করা হলে বিন্নি ফোন ধরেননি, এসএমএসের উত্তর দেননি। প্রদীপ ও নরবাহাদুরের ফোনও বন্ধ ছিল। হিল তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি তথা মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই বারবারই ফোন কেটে দিয়েছেন। যদিও বিনয়-অনীত শিবিরের অনেক নেতার দাবি, তৃণমূল আলাদা দল হিসেবে আন্দোলন করতে চাইলে তাঁরা কখনও আপত্তি করবেন না। তবে বিনয় ঘনিষ্ঠ মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এক নেতা জানান, তৃণমূলের পাহাড়ের কিছু নেতা একে অন্যের নামে যেভাবে ফোনে ক্ষোভ উগড়ে দেন, তাতে সংগঠন জোরদার করার আগে ওঁদের একমত হওয়া জরুরি। তৃণমূলের নেত্রী শান্তার অবশ্য দাবি, তাঁদের দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement