রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের উত্তরবঙ্গ সফরের সময়ই এনআরএসি নিয়ে সুর চড়াতে চলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। আজ, মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি আসছেন রাজ্যপাল। বেশ কয়েকটি বৈঠক রয়েছে তাঁর। সরকারি সূত্রের খবর, এ জেলায় তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি না থাকায় রাজভবন থেকে শাসকদলের কাউকে সরাসরি বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। থাকার মধ্যে কার্শিয়াংয়ের বিনয়পন্থী মোর্চার বিধায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু তিনি কোনও বৈঠকে যাচ্ছেন না। অন্যদিকে, বণিকসভার অনুষ্ঠানটিতে রাজ্যপালের সঙ্গে থাকার কথা ছিল রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম দেবের।
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যপালের সঙ্গে অনুষ্ঠানের এক মঞ্চে থাকছেন না মন্ত্রী। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা থেকে ফিরে তিনি রাজ্যের আর এক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে সোজা চলে যাবেন ময়নাগুড়িতে। অভিযোগ, সেখানে গত সপ্তাহে অন্নদা রায়। দুই মন্ত্রী অন্নদার পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। মনে করা হচ্ছে, সেখান থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এনআরসি নিয়ে সুর চড়াবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজ্যপালের অনুষ্ঠানে যাবে না তৃণমূল। বরং তিনি শিলিগুড়িতে থাকাকালীনই ময়নাগুড়ি থেকে এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিতে চাইছেন গৌতমরা।
গৌতম বলেন, ‘‘ওই বণিকসভার প্রতিনিধিরা আমাকে অনেক আগেই আমন্ত্রণ জানান। ওখানে রাজ্যপাল আসছেন শুনেছি। তবে এই অনুষ্ঠানের থেকে ময়নাগুড়ির অন্নদা রায়ের পরিবারের পাশে থাকাটা আমাদের বেশি জরুরি বলে মনে হয়েছে।’’ তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই নির্দেশ দেন।
ময়নাগুড়ির ওই পরিবারের কাছে নিয়মিতই যাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। এ দিন যান আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। সৌরভ বলেন, “অন্নদা মোটেই ঋণের জালে আবদ্ধ ছিল না। এনআরসি আতঙ্কেই ভুগছিলেন।”
জেলার অন্য জনপ্রতিনিধিরা অবশ্য রাজ্যপালের বৈঠকে যাবেন। তাঁরা বরং রাজ্যপালের কাছে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে চান। শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের কী পরিস্থিতি কাজ করতে হচ্ছে তা রাজ্যপালকে বলব। উনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে আমাদের ডেকেছেন, আমরা যাব।’’ কার্যত একই সুরে কথা বলেছেন কংগ্রেসের বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারও। উল্টো দিকেস বিজেপির শিলিগুড়ির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সফর পুরোটাই সরকারি। আমাদের দেখা করার এখনও কোনও বিষয় নেই।’’
অন্য দিকে, জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির বৈঠকও করতে হতে পারে অরূপকে। কারণ, কৃষ্ণকুমার কল্যাণী জেলায় দলীয় বিভিন্ন স্তরে ক্ষোভ।