কোচবিহারের ছড়ারকুঠিতে চলছে রামমন্দির তৈরির কাজ। জয়পুর থেকে নিয়ে আসা হয়েছে পাথর ও মূর্তি। নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহারেও তৈরি হচ্ছে রামমন্দির। রাজারহাটের ছড়ারকুঠি গ্রামের। সে মন্দির তৈরির জন্য জয়পুর থেকে নিয়ে আসা হয়েছে মার্বেল পাথর। এসেছে দেবতার মূর্তিও। জয়পুর থেকে আসা ন’জন স্থাপত্যশিল্পী মন্দির তৈরির কাজ করছেন। ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই জেলার ওই মন্দিরও ভক্তদের জন্যেও খুলে দেওয়া হবে। তৃণমূলের দাবি, ‘রামমন্দির’ তৈরির পিছনে রয়েছে বিজেপি। শুধু ওই একটি নয়, জেলায় আরও কয়েকটি রামমন্দির তৈরি করে ভোটে সুবিধা নিতে চায় বিজেপি। বিজেপির অবশ্য দাবি, মন্দির নির্মাণের সঙ্গে তাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই। গ্রামের মানুষই মন্দির গড়ছেন, বিজেপির মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কেরা শুধু তাঁদের সহযোগিতা করছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি উদয়ন গুহ সোমবার বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ কোনও কাজ করেননি। সে জন্য এখন ভোটে জিততে রামমন্দিরে শরণাপন্ন হয়েছেন। মানুষ সব বুঝতে পারছেন।’’ বিজেপির কোচবিহার উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তথা দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় দাবি করেন, ওই রামমন্দির তৈরি করছেন গ্রামের মানুষেরা। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ও বিধায়ক মিলে তাঁদের সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ মন্দির নির্মাণ করবেন, তাতে তৃণমূলের অসুবিধা কোথায়? আসলে দুর্নীতি করতে গিয়ে, সমাজের ভাল করার কাজের কথা ভুলে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। তাই কেউ ভাল কাজ করলেও তারা বিরোধিতা করছে।’’ কোচবিহার উত্তর বিধানসভা এলাকার মধ্যে ছড়ারকুঠি গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দাদের কয়েক জন জানান, ছড়ারকুঠি মন্দির কমিটি কিছু দিন আগে সেখানে একটি কালীপুজোয় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই সময় রামমন্দির নির্মাণের বিষয় নিয়ে নিশীথের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। তার পরেই কাজ শুরু হয়ে যায়। কালীমন্দিরের পাশেই তিরিশ ফুট বাই পনেরো ফুটের একটি জায়গায় মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যায়। মন্দিরের উচ্চতা হবে তিরিশ ফুট, চওড়ায় পনেরো ফুট।
ওই এলাকার বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য প্রভাকর দত্ত মন্দির কমিটিতে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মন্দির নির্মাণে কেন্দ্রীয় প্ৰতিমন্ত্রী ও এলাকার বিধায়ক সহযোগিতা করেছেন। জয়পুর থেকে পাথর ও মূর্তি নিয়ে আসার কাজও হয়েছে তাঁদের উদ্যোগে।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ওই একটি নয়, জেলার আরও কয়েক জায়গায় একই ধাঁচের মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। মাথাভাঙা ২ ব্লকের ঘোকসাডাঙায় একটি মন্দির তৈরির উদ্যোগ হয়েছে। তা নিয়ে উদয়নের মন্তব্য, ‘‘সবই ভোট বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা।’’ নিশীথকে ফোনে পাওয়া যায়নি। সুকুমারের দাবি, ‘‘মন্দিরের সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই।’’