প্রতীকী চিত্র।
‘পিকে টিমে’র তীক্ষ্ণ নজর থাকা সত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খামতি নেই কোচবিহার জেলা তৃণমূলে। পুরভোটে টিকিট পাওয়া নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে লড়াই তীব্র হয়েছে।
এমনকি, একে অপরের বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগও পাঠাতে শুরু করেছেন। কোচবিহার পুরসভা তো বটেই, জেলার বাকি পাঁচ পুরসভাতেও একই ছবি। জেলা নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠেরা যেমন লড়াইয়ে রয়েছেন, সেইসঙ্গে ওয়ার্ডে কে কতটা প্রভাবশালী তা নিয়েও নিচুতলায় প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কাউন্সিলরদের কাজ নিয়েও অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করেছে। যদিও নেতৃত্বের কেউই এসব স্বীকার করতে চাইছেন না। দলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ থেকে বর্তমান সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের দাবি, দলের কোথাও কোনও কোন্দল নেই।
পরিস্থিতি অবশ্য অন্য কথা বলে। কোচবিহার পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে বর্তমানে ১৪টি তৃণমূলের দখলে। এর মধ্যে কয়েকজন নির্দল ও বাম কাউন্সিলর সম্প্রতি তৃণমূলের যোগ দিয়েছেন। আরও একজন কাউন্সিলর তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ওই কাউন্সিলর এবার টিকিট পেতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু দলেরই একটি অংশ ওই ওয়ার্ডগুলির কয়েকটিতে নতুন প্রার্থীর পক্ষে সওয়াল করছেন। আবার তৃণমূলের টিকিটে জিতে আসা কাউন্সিলরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘকালের। দলের কাউন্সিলরদের একটি অংশ মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, অপর অংশ তাঁর বিরোধী। ওই ওয়ার্ডগুলির কয়েকটিতেও একই ভাবে নতুন মুখের দাবি উঠতে শুরু করেছে। সে-ক্ষেত্রে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো শুরু হয়েছে।
এইসবের মধ্যেও শহরের একাধিক কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ, উপ-পুরপ্রধান আমিনা আহমেদ থেকে শুরু করে প্রাক্তন কাউন্সিলর উজ্জ্বল তর, যুব নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিকদের। একাধিক তৃণমূল নেতাকে জনসংযোগেও দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেকেই অবশ্য জানিয়েছেন, যে ভাবে সারা বছর বাসিন্দাদের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলেন, তেমনটাই করছেন।
উজ্জ্বল এ দিন বলেন, “প্রার্থীর বিষয়ে আমরা এখন কিছু বলতে পারব না। এটা জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব থেকে দলনেত্রীর বিষয়। দলের একজন সৈনিক হিসেবে যেমন কাজ করে আসছি, তাই করছি।” দলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিরোধের অভিযোগ ঠিক নয়। দলের সবাই মিলেই কর্মসূচি রূপায়ণ করা হচ্ছে। বাকি বিষয় দলীয় নেতৃত্ব সঠিক বিষয়ে জানিয়ে দেবেন।”
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কোচবিহারের এক জেলা নেতা বলেন, “আসলে পিকে’র চোখ ঘুরে বেড়াচ্ছে বলেই সবাই দেখানোর চেষ্টা করছে, কার কতটা প্রভাব।”